এনআইডি ভুলে গাংনীর এক রাজমিস্ত্রির জীবন বরবাদ !
এম চোখ ডটকম,গাংনী:
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) বয়স বেশি করা হয়েছে প্রায় ২০ বছর। এতে কাজের খোঁজে বিদেশ যাওয়াসহ দাপ্তরিক অনেক কাজেই আটকে যাচ্ছেন আজাবুল ইসলাম। দীর্ঘদিন বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোন সুরাহা পাননি তিনি। বয়স সংশোধনের বিষয়টিও আটকে দিয়েছে নির্বাচন অফিস। এতে রাজমিস্ত্রি আজাবুলের জীবন বরবাদ হতে চলেছে। এমন অভিযোগ করে প্রতিকার চেয়ে সরকারের উচ্চমহলের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শালদহ গ্রামের রাজমিস্ত্রি আজাবুলের কথা। আজাবুল শালদহ গ্রামের আঃ বারির ছেলে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সংগ্রহকৃত তথ্য সুত্রে জানা গেছে, ২২/০৪/২০০৮ তারিখে এনআইডি কার্ডের জন্য আজাবুলের তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তি। যিনি তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি হয়তো মনগড়া একটি জন্ম তারিখ বসিয়ে দিয়েছেন। কারণ আজাবুলের কোন প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট নেই এবং তখন জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রচলনও ছিল না। তখন আজাবুলের জন্ম তারিখ লেখা হয় ২২/১০/১৯৭৩। তবে তথ্য সংগ্রকারী আজাবুলের মা, বড় ভাই কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বয়সের সাথে তার বয়সের পার্থক্যের বিষয়টি খেয়াল করেননি।
জানা গেছে, একই সময়ে করা এনআইডি কার্ডের জন্য আজাবুলের মা জাহেদা খাতুনের জন্ম তারিখ ২৭/০৩/১৯৬৪, বাবা আঃ বারির ০৫/০৬/১৯৪৫, বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমের ১৯/০৭/১৯৮৫, ছোট বোন সাবানা খাতুন ১২/০৬/১৯৯২ লিখেছেন। মা, বড় ভাই ও ছোট বোনের বয়সের বিষয়টি লক্ষ্য করলেই দেখা যায় যে আজাবুলের বয়স প্রায় ২০ বছর বাড়িয়ে লেখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমের চেয়ে মো ঃ আজাবুল ৫ বছরের ছোট এবং বোন সাবানা খাতুনের চেয়ে ২ বছরের বড়। অথচ বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী বড় ভাইয়ের চেয়ে আজাবুল ১২ বছরের বড় এবং মা জাহেদা খাতুনের চেয়ে ১১ বছরের ছোট। এই দুটি বয়সের পার্থক্য পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায় আজাবুলের বয়স কতটা বাড়িয়ে বিপাকে ফেলা হয়েছে।
আজাবুল জানান, তিনি বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে গিয়েছিলেন। এসময় তিনি জানতে পারেন যে তার এনআইডি কার্ডের জন্ম তারিখ অনুযায়ী তার বয়স ৫২ বছর। এ বয়সে শ্রমিক হিসেবে কোন দেশই তাকে অনুমতি দেবে না। তখন থেকেই মূলত তার বয়স বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে আসে। এনআইডিতে উল্লেখিত বয়স কোন কাজে না লাগায় এতদিন বিষয়টি তার অগোচরেই ছিল। এখন সংশোধন না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আজাবুল।
আজাবুলের আবেদনের বিষয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আবেদনটি খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তার তদন্তে রয়েছে। যেখানে কাগজপত্র নিয়ে আজাবুলের মত মানুষের যাওয়াটাও কঠিন কাজ। তাই আজাবুলের পরিবারের অন্যান্যদের বয়সের বিষয়টি পর্যালোচনা করে কর্তৃপক্ষ তার সঠিক বয়স নির্ধারণ করে এনআইডি সংশোধন করে দিবেন এমনটি প্রত্যাশা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের।
জানতে চাইলে মেহেরপুর জেলা নির্বাচন অফিসার ওয়ালিল্লাহ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আজাবুলের আবেদন নিষ্পত্তির দায়িত্ব বিভাগীয় কর্মকর্তার উপরে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসের কোন এখতিয়ার নেই।