এবারই প্রথম স্বস্তিতে মানুষ ট্রেন ভ্রমণ করছে- গাংনীতে রেলমন্ত্রী
মেহেরপুরের চোখ, ডট কম, গাংনী:
এবারই প্রথম স্বস্তিতে মানুষ ট্রেন ভ্রমণ করেছে বলে ঈদ যাত্রার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। তিনি বলেন, ঈদ যাত্রায় কোন কালবাজারী হয়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে রাজবাড়ী থেকে ভারত যাওয়ার সময় এই ষোলটাকা গ্রামে অবস্থান করেছিলেন রেলপথমন্তী জিল্লুল হাকিম। ৫৩ বছরের মাথায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির টানে গ্রামটি পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে স্মৃতিচারণ করেন জিল্লুল হাকিম।
শরনার্থী গমন আর মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ বিচরণ ছিল ষোলটাকা গ্রামসহ্ আশেপাশের এলাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন এখানকার মুক্তিকামী মানুষ। অর্ধ শত বছর ধরে রেলপথমন্ত্রী সেই স্মৃতির টানে এখানে ফিরে আসায় এলাকার মানুষ বেজায় খুশি।
স্মৃতিচারণে মন্ত্রী বলেন, রাজবাড়ী থেকে ভারত যাওয়ার পথে কুষ্টিয়া হয়ে মেহেরপুরের ষোলটাকা গ্রামে পৌঁছুলে সন্ধ্যা হয়ে আসে। আমের টিমে ৮ জন যুবক তরুণ ছিল। সকলে মিলে নিরাপদ একটি স্থানে রাত্রি যাপনের প্রয়োজন পড়ে। তখন ষোলটাকা গ্রামের নাসির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আমাদের আশ্রয় হয়েছিল। আমরা সেখানে রাত্রিযাপন করি। গ্রামের লোকজন আমাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছিল। নাছির উদ্দীনের পরিবারের লোকজনের কথা দিয়েছিলাম আমি এখানে আবার ফিরে আসব। সেই প্রতিশ্রুতি আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানের টান থেকেই এখানে এসে ভাল লাগছে।
মেহেরপুর জেলায় রেলপথের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দর্শনা থেকে মুজিবনগর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত রেলপথ নির্মানের ফিজিবিলিটি পরীক্ষার কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে কাজ হবে। তাছাড়া মুজিবনগর থেকে সদর উপজেলা ও গাংনী হয়ে কুষ্টিয়ার সাথে রেল সংযোগ স্থাপন করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মন্ত্রীর সফরকালে আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা: এএসম নাজমুল হক সাগর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা, মটমুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ, কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা, তেতুলবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন, আওয়ামী লীগ নেতা ময়হক ও প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
আওয়ামী লীগ নেতা ষোলটাকা গ্রামের দেলবার হোসেনের পুকুরপাড়ে আয়োজিত স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন গাংনী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহিবুল ইসলাম।
এর আগে দুপুরে মেহেরপুর সার্কিট হাউজ হয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতি সৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন রেলপথমন্ত্রী। সন্ধ্যায় ষোলটাকা গ্রাম পরিদর্শনশেষে সড়ক পথে মেহেরপুর জেলা ত্যাগ করেন তিনি।