গাংনীতে কিশোর বলাৎকার ॥ হুমকীর মুখে ভুক্তভোগী পরিবার
এম চোখ ডটকম,গাংনী: গাংনীর মাঠপাড়ায় এক কিশোর বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেশি মুরছালিন নামের এক প্রভাবশালী কিশোরকে শুধু বলাৎকারই করেনি; তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ভিডিও এবং ছবি ধারণ করে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে কয়েকজন সালিশ করতে চাইলেও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ভুক্তভোগি পরিবারটিকে বাধা ও হুমকী দেওয়ায় বিচার কাজটি থমকে যায়। গেল এক সপ্তাহ যাবত ওই কিশোরের পরিবারটি এক ধরনের জিম্মী হয়ে পড়েছে। মুরছালিন মাঠপাড়ার মোকাদ্দেস ওরফে মুকার ছেলে এবং একজন মুরগী ব্যবসায়ি।
জানা গেছে, চলতি মাসের ৫ তারিখ সকালে মাঠ পাড়ার ওই কিশোরকে পাখি শিকারের কথা বলে তারই খেলার সাথি রাহুলকে দিয়ে ডেকে নেয় মুরসালিন। পরে বাড়ির পাশে মাঠে জোরপুর্বক বলাৎকার করে। আর তার ভিডিও এবং ছবি ধারণ করে কিশোর রাহুল। বলাৎকার শেষে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য শাসিয়ে দেয়। ঘটনাটি ফাঁস হলে হত্যার হুমকিও দেয় মুরসালিন।
এদিকে ওই কিশোর বাড়ি ফিরে অসুস্থতাবোধ করলে বিষয়টি তার মায়ের নজরে আসে। এর পরে স্থানীয় কয়েকজনকে জানান এবং বিচার দাবী করেন তার মা। কিন্তু প্রভাবশালী মুরসালিন ও তার লোকজনের চাপ ও হুমকীর মুখে বিচার কাজটি থমকে যায়। একই সময়ে অসহায় পরিবারটি গাংনী থানায় আসলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদেরকে নিরুৎসাহিত করেন। মেডিকেল করা হলে কোন আলামত পাওয়া যাবে না, মামলা করলেও কিছু হবেনা উল্টো বিপদে পড়তে হবে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে একরকম হতাশা নিয়েই ফিরে আসেন তারা।
বিচার না পেয়ে ও নিরাপত্তাহীন হয়ে এক রকম গৃহবন্দী হয়ে পড়েন ওই পরিবারটি। থানা থেকে ফেরার পর মুরছালিনের মা ও বোন ওই কিশোরের বাড়িতে যায় এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য হুমকি ধামকী দেয়। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে এ পাড়া থেকে উচ্ছেদ করা হবে বলেও হুমিক অব্যহত থাকে। এর পরদিন মুরছালি ওই কিশোরের মাকেও ধর্ষনের হুমকী দেয়। অবশেষে গাংনী পৌর মেয়রকে জানালে তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাশিদুল ইসলাম খোকনকে দায়িত্ব দেন ঘটনাটি তদন্ত ও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। কাউন্সিলর রাশিদুল ইসলাম খোকন বিস্তারিত জেন সাংিবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন এবং একই সাথে থানায় মামলা করার ওই কিশোরের পরিবারের লোকজনকে পাঠিয়ে দেন।
ওই কিশোরের মা জানান, তার ছেলের উপর পাশবিক নির্যাতনের পর থেকেই তারা হুমকীর মুখে। স্বামী বিদেশ থাকায় গোটা পরিবারটি নিরাপত্তাহীন। তার উপর একের পর এক হুমকী ধামকী। তিনি এর সুষ্ঠু ও সুবিচার দাবী করেন।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, ওই কিশোরের পরিবারটি ইতোপূর্বে থানায় এসেছিলেন। মামলার করার বিষয়ে তারা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলে বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু পরে আর তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ শুক্রবার ওই পরিবারটি থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।