এম চোখ ডটকম,গাংনী:
মেহেরপুরের গাংনীর ছাতিয়ান বাকশক্তিহীন পিতার সব সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে
নিয়েছেন দুই বোন। দুই ভাইকে ফাঁকি দিয়ে বোনেরা পিতার সম্পত্তি হস্তগত
করেছেন। শরিকানা তথ্য গোপন করে জমি রেজিস্ট্রি করে দুই ভাইকে পথে বসানো
হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। শনিবার বিকেলে ছাতিয়ান
গ্রামে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শাহীন বক্তব্যে বলেন, তার পিতা সাবেক সেনা সদস্য
জবেদ আলীর দুই সংসার। প্রথম স্ত্রীর পক্ষে শাহীনসহ দুই ভাই এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর
দুই মেয়ে রয়েছেন। স্ট্রোক জনিত কারণে জবেদ আলী প্যারালাইজ্ ও বাকশক্তিহীন
হয়ে পড়েন। ঢাকায় চিকিৎসা করানোর পর বাড়িতে আনা হয়। কিন্তু প্রতিদিন
থেরাপি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। এজন্য এক বোনের বাসায় রাখা হয়। কিন্তু বোনেরা
এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পিতার সমস্ত সম্পত্তি ভাইদের ফাঁকি দিয়ে নিজেদের
করে নেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়। সেমত চিকিৎসার কথা বলে তার বৈমাত্রিক বোন
সেলিনা খাতুন ও লিলি খাতুন গত বছরের ১৬ অক্টোবর গাংনী সাব রেজিস্ট্রি
অফিসে পিতাকে নিয়ে গিয়ে স্থাবর অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নেয়।
যার দলিল নং- ৮০৭৯/২২। দলিলে সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মাঠ কবর স্থান ও বাড়িঘর। আর
এতে সনাক্তকারী হিসেবে রয়েছেন জনৈক তরিকুল ইসলাম।
শাহিন আরো জানান, তার পিতা জবেদ আলী একজন শিক্ষিত ও সামরিক বাহিনীর
সদস্য। তার সকল ওয়ারিশদের সম্মতিতে ভাগ বন্টন হওয়া উচিত ছিল। অথচ
বাসস্থানে উপস্থিত না হয়ে কোন তদারকি ও তদন্ত ছাড়াই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে
বঞ্চিত করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয় দুই মেয়ে। এতে জবেদ আলীর স্ত্রী ও তার দুই
সন্তান সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা সম্পত্তি ফিরে পেতে দলিল বাতিলের জন্য
সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ইউপি মেম্বর হাফিজুল জানান, জবেদ আলীর দুই স্ত্রী।
জবেদ আলী অসুস্থ হবার পর উভয় স্ত্রীর সন্তানরা চিকিৎসা করছেন। চিকিৎসার জন্য
দুই মেয়ে তার বাবাকে তাদের জিম্মায় রেখে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কমিশন করে সব
সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে। এটি অন্যায় ও বড় ধরণের অপরাধ। সম্পত্তি হাতিয়ে
নেয়ার পর দুই বোন ও তার লোকজন স্ত্রী ও দুই ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার
চেষ্টা করছেন ও নানা ভাবে হুমকী দিচ্ছেন। ওই দুই বোনের সাথে বারবার
যোগাযোগ করেও কোন কর্ণপাত করেনি তারা।
গ্রামবাসিরা জানান, জবেদ আলী ছিলেন একজন শিক্ষিত ও মার্জিত ব্যক্তি। সে
তার কোন সন্তানকে বঞ্চিত করতে পারেন না। এখন তিনি কথা বলতে না পারায়
সুযোগটি হাতিয়ে নিয়েছেন তার সুচতুর দুই মেয়ে। জবেদ আলীর স্বাক্ষর করতে
পারলেই স্বাক্ষরের স্থলে টিপ সই নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার মেয়েরা চক্রান্তের মাধ্যমে
শরিক ফাঁকি দিয়েছে তা স্পৃষ্ঠ। অপরদিকে জবেদ আলী কোন কথা বলতে পারেন না।
হলফ নামায় তার দুই সন্তান ও এক স্ত্রীর নাম দেয়া নেই। ওয়ারিশ পত্রটিও সঠিক নয়
বলে দাবী করেছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসি উপস্থিত ছিলেন।