গাংনীতে বিএনপির বিশাল বিক্ষোভ মিছিল \ গাংনী উপজেলায় বৈষম্য দূর করার প্রত্যয়
এম চোখ ডটকম,গাংনী:
ভারতের পানি আগ্রাসন ও স্বৈরাচারী হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে মেহেরপুরের গাংনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এ বিক্ষোভ মিছিল পরিণত হয় বিশাল প্রতিবাদী কর্মসুচীতে। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলুর ডাকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজারো নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশ গ্রহণ একটি সফল কর্মসুচী বাস্তবায়ন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
বিকেল থেকেই বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা ছোট বড় যানবাহনযোগে গাংনীতে আসতে থাকেন। সময় গড়ানোর সাথে সাথে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণ কার্যত মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় গাংনী। মিছিলে মিছিলে ভারতীয় আগ্রাসন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ¯েøাগান দেয় উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, বৈষশ্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে লড়াই করেছিল আমরা একে একে তার সুফল পেতে শুরু করেছি। আজকে স্বাধীনভাবে গাংনীতে এতবড় সমাবেশ করতে পারছি; মান খুলে কথা বলতে পারছি এটা বড় সুফল।
গাংনী উপজেলা প্রতিটি সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাজের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময়ে গাংনী উপজেলায় যে ঘুষ দুর্নীতি ও লুটপাট চলেছে তা জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা যদি এই নীতিতে চলতে পারেন তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আত্মত্যাগদানকারীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা হবে। বাংলাদেশ থেকে ঘুষ দুনীতি বন্ধ হলে তাদের আত্মার শান্তি পাবে।
বাংলাদেশের মানুষের উপর ভারতের আগ্রাসনের নানা চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, পিলখানায় এতগুলো সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে যার বিচার হয়নি। কয়েকদিন আগে কুমিল্লা, ফেনি, নোয়াখালীসহ কয়েকটি জেলায় মানুষকে রাতের আঘারে বাধ খুলে দিয়ে ডুবিয়েছে ভারত। শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া বসে কু করার চেষ্টা করছে। কয়েকদিন আগে আনছার ভিডিপির আন্দোলনে দাবি মেনে নেওয়ার পরও তারা সচিবালয় ঘেরাও করে রেখেছিল যা শেখ হাসিনার কু করার নজীর।
গাংনী উপজেলা পরিষদের বিদায়ী চেয়ারম্যান এমএ খালেক, সাবেক পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী ও আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তারা কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছে। এর বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করব। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হতে হবে। না হলে আমরা নিজের হাতে বিচার তুলে নিতে বাধ্য হব।
পুলিশের প্রতি স্বাভাবিক কাজে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে আসাদুজ্জামান বাবলু আরও বলেন, রাতের আঘারে চুরি-ছিনতাই হচ্ছে। পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুলিশ এখনও আওয়ামী লীগের মহব্বত ছাড়তে পারেনি। দ্রæত কর্মে ফিরে অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য গাংনী থানার ওসি প্রতি আহবান জানান তিনি।
হাসপাতাল বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি মতিউর রহমান মোল্লা। পৌর জাসাস সাধারণ সম্পাদক সুলেরী আলভীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মাহবুবুর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা উলামা দলের আহবায়ক ইনামুল হক, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ডাকু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হক, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান মনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান শাওন ও ইকবাল হোসেন, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আমিনুল বারী মোতালেব, জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি রেজানুল হক ইমন, সাবেক ছাত্রনেতা সাহিবুল ইসলাম ও নুরুজ্জামান হকাসহ বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসা নেতাকর্মীরা ¯েøাগানে ¯েøাগানে যেন এক উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিন রাজপথে মুক্ত কর্মসুচী করতে না পারা বিএনপির বাধাহীন নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল তাই আনন্দের বন্যা। সমাবেশের পরে আসাদুজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।