গাংনী গাড়াবাড়ীয়ায় বিএনপির বিশাল সমাবেশে জাভেদ মাসুদ মিল্টন ।। পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেয়েছে দেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পেতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেছেন, ১৭ বছরে বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে দেয়নি; মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। যার পরিণতি ৫ আগস্টের বিপ্লবে তাদের পলায়ন করতে হয়েছে। আমরা পালাতে চায় না। তারা লাশের উপরে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। আমরা চাই গণতন্ত্রকামী মানুষের ভালবাসায় আদর্শ দেশ গড়তে। একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ পেতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বির্নিমানের মধ্য দিয়েই যে চুড়ান্ত বিজয় হবে তার জন্য ধর্য্য ধরতে হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে গাংনী উপজেলারা কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়ীয়ার কুতুপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিগত ১৭ বছর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সময় পার হয়েছে উল্লেখ করে জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, আমরা জানতাম এই গাংনী বিএনপির ঘাঁটি। গাড়াবাড়ীয়ার নব্বই ভাগ মানুষ বিএনপিকে ভোট দেয়। সেই গাড়াবাড়ীয়ার মত জায়গাতে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর পা ফেলার সুযোগ পাইনি। এই আওয়ামী দুস্কৃতিকারীদের অত্যাচার, যুলুম, ভয়-ভীতি, দখল, লুটপাট ও নিপড়নসহ বিভিন্ন কারণে এই গাড়বাড়ীয়ার বিএনপি জিম্মিদশরার মধ্য দিয়ে জীবন-যাপন করেছে। আজকে সেই দশা নাই। আপনার দেখেছেন- ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে একই ঘটনা ঘটেছিল পচাত্তরের ১৫ আগস্ট। একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছিল। ঠিক তারই পেত্মাতা ৫ আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আপনাদের ভয়ে পলায়ন করেছে।
৫ আগস্টের বিজয় সাময়িক বিজয় উল্লেখ করে নেতকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, সবেমাত্র আমরা একটা স্বাধীন ও মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। যার কারণে কাথুলী ইউনিয়নের মানুষ আজ মুক্ত বাতাসে এই মাঠে সমবেত হতে পেরেছেন। তবে ততদিন পর্যন্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত না হবে; যতদিন পর্যন্ত আপনারা ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত চুড়ান্ত বিজয় হবে না। তাই দুঃসময়ে আমিসহ যে সকল বিএনপি নেতাকর্মীরা আপনাদের পাশে ছিল আগামি দিনেও আমি আপনাদের পাশে থাকবো বলে নেতাকর্মীদের প্রতিশ্রæতি দেন জাভেদ মাসুদ মিল্টন।
ভারত হয়ে গেছে বাংলাদেশী অপরাধীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময়ে যারা হত্যা, গুম, খুন, লুটপাট, অর্থ পাচার করেছে আজ তাদের আশ্রয়স্থল ভারতে। যারা ছেলেকে পিতার কাছ থেকে আর পিতাকে যারা ছেলের কাছ থেকে বিছিন্ন করেছে সেইসব দুস্কৃতিকারীরা আজ ইন্ডিয়াতে পলায়ন করছে। তবে পলায়ন করেও রক্ষা হবে না। এদেশের মানুষ আপনাদের বিচার অবশ্যই করবে ইনশাল্লাহ। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের অসংখ্য তরুণ ভাই-বোনেরা আত্ম উৎসর্গ করেছে। নৃশংস কয়েকটি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল আমিন মাস্টার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাথুলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ার্যান ফেরদৌস ওয়াহেদ বেল্টু।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল হক, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম নাসির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান গাড্ডু, আব্দুল আউয়াল ও ইনসারুল হক ইন্সু, রাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু, গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মেঘলা, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী, সহ সভাপতি আব্দাল হক, বিএনপি নেতা জাফর আকবর, গাংনী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক চপল বিশ্বাস, সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম, গাংনী পৌর যুবদলের আহবায়ক সাহিদুল ইসলাম, সদস্য সচিব এনামুল হক, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লবক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবাযক শহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপি নেতা লাভলু মাস্টার।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন কাথুলী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে কাথুলী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা খÐ খÐ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ দিক ছিলে বিপুল সংখ্যক মহিলা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি।