এম চোখ ডটকম, মুজিবনগর : মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে আদালতের আইন অমান্য করে রাতের আঁধারে পাচিল ভেঙ্গে জমি দখল করে একটি ছোট ঘর করে অবস্থান নিয়েছে প্রতিপক্ষ রিনা মন্ডল গং । প্রতিপক্ষ রিনা মন্ডল শুধু আদালতের শান্তি-শৃংখলা রক্ষার আদেশ নয় ; নিজের দায়ের করা মামলার রায় না হতেই জোরপূর্বকওই জমি দখলের চেষ্টা করেছেন। এ আইন ভঙ্গের কারণে এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে। জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য দেবাশীষ বিশ্বাস ওরফে সংকর বিশ্বাসের বাবা সৌরেন্দ্র বিশ্বাস ও কাকা সুখেন্দ্র বিশ্বাস ১৯৮৪ সালের ১৯ জুন, ৫৪৬১ নং দলিল মুলে এসএ ১৯ নং খতিয়ানে বাগোয়ান মৌজায় এসএ ১৮০৮ দাগে ৮৬ শতাংশ (বাগান) এবং একই তারিখে ৫৪৬২ নং দলিল মুলে এসএ ৪০০ খতিয়ানে এসএ ৯৯২ ও ৯৯৩ দাগে এক একর ০৫ শতাংশ জমি বিক্রেতা সুরবালা সিং, জং- জেঠারাম সিং এর নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে স্বত্ববান হন এবং তাদের অরিশগন ভোগদখল করে আসছেন। ওই জমি তাদের নামে নাম খারিজ হয়। তারা ওই জমির খাজনাও পরিশোধ করে আসছেন। এদিকে সুনিল কুমার বিশ্বাসের দুই পুত্র সৌরেন্দ্র বিশ্বাস ও সুখেন্দ্র বিশ্বসের সাথে এক কন্য শৈবালীনি বিশ্বাসের ওরফে দুলু বিশ্বাসকে ওয়ারিশ দাবি করে শৈবালীনি বিশ্বাস ওরফে দুলু বিশ্বাসের কন্যা রিনা বিশ্বাস ওরফে রনু বিশ্বাস গং ওই জমির হিস্যা পেতে মেহেরপুর সহকারি জজ আদালতে আবেদন করেন। যার দেং নং-১৮৩/২০২২। রিনা বিশ্বাস ওরফে রনু বিশ্বাস গং এর দাবি সুরবালা সিং মারা গেলে তার একমাত্র ভাই সুনিল কুমার বিশ্বাসকে ওয়ারিশ রেখে যান। দুই পক্ষের দ্বন্দ আদলত সহ প্রশাসনে গড়ালে বিভিন্ন সময় তদন্ত হয়। এতে বাগোয়ান ইউপি’র চেয়ারম্যান আ্য়ূব হোসেন জানান- ওই জমি দেবাশীষ বিশ্বাস ওরফে সংকর বিশ্বাসের বাবা সৌরেন্দ্র বিশ্বাস ও কাকা সুখেন্দ্র বিশ্বাসের ক্রয়সূত্রে পাওয়া এবং তার দখলে পাচিল দিয়ে ঘেরা। মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাহফেজখানার রিপোর্টে জানা যায় উক্ত জমি সৌরেন্দ্র বিশ্বাস ও সুখেন্দ্র বিশ্বাসের নামে রেজিষ্ট্রি করা আছে। সর্বোপরি দূর্নীতি দমন কমিশন খুলনার এক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়- ভূমি অফিস মুজিবনগরের রেকর্ডপত্রের আলোকে নালিসী জমির মালিক সৗরেন্দ্র বিশ্বাস ও সুখেন্দ্র বিশ্বাস এবং তাদের ওয়ারিশগন ভোগদখল করছেন। তারা আরো সুপারিশ করেন বাদি রিনা মন্ডলের দায়ের করা মামলা হতে বিবাদী দেবাশীষ বিশ্বাসের ওরফে সংকর বিশ্বাস গংকে অব্যহতি প্রদান করার জন্য। সম্প্রতি বাগোয়ান ইউপি’র চেয়ারম্যান আ্য়ূব হোসেনের জাল স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করে মিথ্যা প্রত্যায়নপত্র উপস্থাপন করে উক্ত জমির নাম খারিজ বাতিল করেন মুজিবনগর ভূমি অফিস। পরবর্তীতে ইউপি’র চেয়ারম্যান আ্য়ূব হোসেন মিথ্যা স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে পুনরায় উক্ত জমির দখল স্বত্ব সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উপজেলা প্রশাসন থেকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়। এদিকে দেবাশীষ বিশ্বাস ওরফে সংকর বিশ্বাসের আবেদনের (পিটিশন নং ৩৪৯/২০২২, ১৪৫ ধারায়) প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত তফশিল ভূক্ত সম্পত্তিতে শান্তি-শৃংখলা রক্ষা বজায় রাখার জন্য মুজিবনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। দেবাশীষ বিশ্বাস ওরফে সংকর বিশ্বাস জানান এরপরও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মল্লিকের সহযোগিতায় ও ইনধোনে গত শনিবার দিনগত রাত ২ টার দিকে নালিশী জমির পাচিল ভেঙে পাচিলের ভেতরে থাকা ১০-১২ টি লিচু গাছ কর্তন করে রিনা মন্ডল একটি ছোট্ট ঘর করে দখল নিতে অবস্থান করছে। তারা এতে প্রায় প্রতিপক্ষের ৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলে দাবি দেবাশীষ বিশ্বাস ওরফে সংকর বিশ্বাসের। রিনা মন্ডল গং প্রতিপক্ষ দেবাশীষ বিশ্বাসের ওরফে সংকর বিশ্বাস গংদের খুন-গুমের হুমকী দিচ্ছে বলে জানান সংকর বিশ্বাস । সহযোগিতা কারী ও ইন্ধনদাতা স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মল্লিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একজন আইনী লোক হয়ে আইন ভঙ্গ করা বা আইনের বিপক্ষে সহযোগিতা করা এই সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এই জমি দখলের বিষয়ে আমি কোন ভাবে জড়িত না। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মেহেদী রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান যেহুতু ঐ জমিতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য আদালতের নির্দেশ দেয়া আছে তাই বিষয়টি জানার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিনা বিশ্বাস ওরফে রনু বিশ্বাস কে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
মুজিবনগরে আইন অমান্য করে রাতের আঁধারে পাচিল ভেঙে ঘর তৈরি
previous post