মেহেরপুর-২ প্রার্থীর সংখ্যা আর ভোটের মাঠের হিসেব করতে দুই দিনের অপেক্ষা
এম চোখ ডটকম,গাংনী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে প্রার্থী মোট ১১ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও তিন জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের সবগুলো প্রার্থী যদি মাঠে থাকে তাহলে ভোটের হিসেবে নতুন করে কষতে হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। তবে শেষ পর্যন্ত কোন কোন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে থাকবেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র দুই দিন। জানা গেছে, এ আসনটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুুকল ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গণি, জাতীয় পার্টির কেতাব আলী, বাংলাদেশের ওর্য়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য নুর আহম্মদে বকুল, এনপিপি প্রার্থী গোলাম রসুল, বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী আল ফারুক, জাকের পার্টি প্রার্থী সামসুজ্জোহা সোহেল ও বাংলাদশে সাংস্কৃতকি মুক্তিজোট প্রার্থী শাহ জামাল। নেতাকর্মীরা জানান, এ আসনটিতে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ভাগ ও উপভাগে বিভক্ত। এক সময় সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন গ্রæপ বনাম বর্তমান সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক গ্রæপ ছিল। পরবর্তীতে গ্রæপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর গ্রæপিং আরও তীব্র আকার ধারণ করে। নৌকা প্রতীকের পক্ষে একটি গ্রæপ ছাড়াও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী তিন জনকে তিনটি গ্রæপ হিসেবেই দেখছেন নেতাকর্মীরা। স্থানীয় কোন্দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ডের নমনীয়তাকে প্রার্থীর সংখ্যার বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে জানালেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ভোটাররা মনে করছেন, বিএনপি-জামায়াত তফশীল অবৈধ দাবি করে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে আসছে। ভোট কেন্দ্রে ভোটের উপস্থিতির সংখ্যার উপর আওয়ামী লীগের লাভ ক্ষতি নির্ভরশীল। তাই আওয়ামী লীগ চাইবে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আর বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবে না এটাই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দল মিলে কতভাগ ভোটারকে কেন্দ্রে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে তা দেখার বিষয়। ভোটারদের অনেকে মনে করছেন, যদি ৫০ ভাগ ভোট পোল হয় তার মধ্যে আওয়ামীগের ভোটারদের সংখ্যাই বেশি থাকবে। তাই নৌকা প্রতীকসহ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবে চার জন। ফলে চার প্রার্থীর মধ্যেই ভোট ভাগাভাগি হবে। সেক্ষেত্রে কে কত ভোট ঘরে তুলতে পারবেন তা দেখার জন্য ভোটের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের চার প্রার্থীর মধ্যেই মূলত ভোট যুদ্ধ হবে। তবে ১৭ তারিখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে যদি কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে সেক্ষেত্রে ভোটের হিসেব আবারও পাল্টে যাবে। তাই ভোটযুদ্ধে কোন প্রার্থীর কি অবস্থা হবে তার হিসেবের জন্য আপাতত ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র গাংনী উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর-২ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৪৯৩ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৪ জন এবং হিজরা ২ টি। ১৯৯১, ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপি, ১৯৯৬ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করে। জানা গেছে, এ আসনটিতে মোট ১৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থীত ৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ে বাতিল করেন মেহেরপুর জেলা রির্টার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক শামীম হাসান। এরা হলেন- মোখলেছুর রহমান মুকুল, রাশেদুল ইসলাম জুয়েল, নুরুল ইসলাম রিন্টু, জাহাঙ্গীর আলম বাদশা ও ডক্টর আশরাফুল ইসলাম। মধ্যে মোখলেছুর রহমান মুকুল ও রাশেদুল ইসলাম জুয়েল ইসিতে আপিল করেন। তবে শুধুমাত্র মোখলেছুর রহমান মুকুলের মনোনয়নপত্রের বৈধতা পায়। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে মোট ভোটারের এক ভাগ ভোটারের সম্মতি স্বাক্ষর যাচাইয়ে এসব মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। আপিল সিদ্ধান্তের পর এ আসনটিতে মোট প্রার্থীর সংখ্যা এখন ১১ জন।