গাংনীতে প্রবাসীর স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগ, সালিশের টাকা গেল পুলিশ-প্রভাবশালীদের পকেটে
স্টাফ রিপোর্টার:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের পীরতলা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওই গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সালিশ ডেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় মীমাংসা করেন, যার পুরো টাকাই ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে পুলিশের সদস্য ও ওই সমাজপতিদের পকেটে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে প্রবাসীর স্ত্রী ঘরে একা ছিলেন। গভীর রাতে ওই যুবক দেয়াল টপকে তার ঘরে প্রবেশ করে তাকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তার আত্মচিৎকারে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ছুটে এলে মুন্না পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু এলাকাবাসী তাকে ধরে ফেলে।
ঘটনার পরদিন শুক্রবার সকালে স্থানীয় প্রভাবশালীরা সালিশ বসিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে জোরপূর্বক তালাক দিতে বাধ্য করেন এবং অভিযুক্ত ধর্ষকের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেন। তবে সেই টাকা ভুক্তভোগী নারী পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রবাসীর স্ত্রী বলেন, সে আমাকে জোর করে ধর্ষণ করেছে। আমি চিৎকার করলে লোকজন এসে তাকে ধরে ফেলে। কিন্তু পরদিন সমাজপতিরা আমাকে জোর করে তালাক দিতে বাধ্য করেন। জরিমানার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার এক টাকাও আমি পাইনি সব টাকা স্থানীয় পুলিশ ও প্রভাবশালীরা ভাগ করে নিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, সালিশে ঠিক করা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এজন্যই তালাক দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খবর পেয়ে ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলেও কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি। বরং টাকা লেনদেনের বিনিময়ে ঘটনাটি ম্যানেজ করে দেন বলে তারা দাবি করেন।
পীরতলা গ্রামের সমাজসেবক শাহ আলম বলেন, ঘটনার রাতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। গাংনী থানার ওসি ও ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আব্দুল করিমকে জানানো হয়। পরে চার সদস্যের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। তারা বলে, স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হবে। এরপর টিমটি ফিরে যায়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ধর্ষক পলাতক রয়েছে। তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
ভবানীপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আব্দুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাইনি, এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে আমি জানি না।
অন্যদিকে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ বানী ইসরাইল বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি জানি না। ভুক্তভোগী মহিলা থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।