গাংনীতে শিক্ষকদের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব, ক্লাস বর্জন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ
এম চোখ ডটকম,গাংনী: গাংনীর জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীণ শিক্ষকদের অপসারনের দাবীতে ক্লাস বর্জন করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা। তারা ক্লাস বর্জন করায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ফুঁসে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন শিক্ষকদের অপসারনের প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহষ্পতিবার সকালে বিক্ষোভ করে এবং নিয়মিত পাঠদান চালু রাখার দাবীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দেয়।
নবম শ্রেণির ইসরাত জাহান, নাজমুস সাকিব ও আব্দুস সামাদসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানায়, জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুনাম থাকায় তারা অনেকেই বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বিদ্যালয়টি গাংনী উপজেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর কতিপয় শিক্ষক আধিপত্য বিস্তারের প্রভাব খাটাচ্ছেন। তারা নন এমপিও (খন্ডকালীন) ১৭ শিক্ষকের অপসারনের দাবী তোলেন।
গত কয়েকদিন আগে ননএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অপসারনের দাবী তুলে ক্লাস বন্ধ করে দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা। এতে করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকল শিক্ষক মিলে পাঠদানসহ প্রতিষ্ঠানটির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার দাবী জানালে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মদদপুষ্ঠ দশম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয় ও মারধর করে। বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেয় শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, বিদ্যালয়ের সুনাম অর্জন ও পাশের হার সর্বোচ্চ হবার ব্যাপারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চেয়ে নন এমপিভুক্ত শিক্ষকদের অবদান বেশি। ননএমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অত্যন্ত যত্নসহকারে পাঠদান করার কারনে অন্যান্য বিদ্যালয় থেকে তারা তাদের সন্তানকে এ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছেন। অথচ ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে কতিপয় শিক্ষক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ও তারা তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হবার সম্ভাবনা বেশি।
জোড়পুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আল নুরানী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, শিক্ষার্থীদের টাকায় নন এমপিও(খন্ডকালীন) শিক্ষকরা তাদের সম্মানী গ্রহন করেন। বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে টাকা দেয়া হয়না। তারপরও কতিপয় শিক্ষকের ইন্ধনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ননএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অপসারন দাবী তুলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছেন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনেছেন এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সমাধান করবেন।