এম চোখ ডটকম, গাংনী: ২৮-০২-২২ ইং।
গাংনী; বড়ভাই কর্তৃক ছোটভাইকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমি থেকে বঞ্চিত ও উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে বড় ভাই হযরত আলীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ পৈত্রিক জমিতে বসবাস করেন। ছোট ভাই আলম মারা যাওয়ায় সুযোগে নেয় বড় ভাই হযরত আলী ওরফে মন্টু। মন্টু ও তার মেয়ে নাহার নাছরিন হীরা মিথ্যা স্বত্ত্ব দাবি করে উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সমাধান মেলেনি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনীর জোড়পুকুরিয়া গ্রামে।
মৃত আলমের মেয়ে নাজমুন্নাহার জানান, জোড়পুকুরিয়া গ্রামের ২০৬ নং খতিয়ানে একাধিক দাগে সর্বমোট ৮-৪০ শতক জমি। এর মালিক মৃত অ্যালবাস মন্ডলের ছেলে মৃত আব্দুল কাদের, মৃত হারেজউদ্দীন, হযরত আলী ওরফে মন্টু ও সাইফুল ইসলাম আলম ও ২ কন্যার নামে রেখে যান। ওই জমির মধ্যে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণির ১০২৩, ১০২২ দাগে যথাক্রমে ৩০ ও ২৯ শতাংশ জমি রয়েছে। পাশাপাশি দাগে পারিবারিক কবরস্থান এবং ফলজ গাছপালা রয়েছে। ওই ফলজ গাছের ফলফলাদি অন্যান্য ভাইদের ওয়ারিশগন ভোগদখল করে আসছে। এমনকি বাড়ির সামনে অবস্থিত জলাকার পুকুরে প্রায় ৩০-৩২ বছর যাবৎ একসাথে হযরত আলী ও ছোট ভাই আলম মাছ চাষ করে আসছিলেন। পুকুর খনন, মাছ চাষ, পুকুর লিজ দেয়া, টাকা ভাগাভাগি সবই একসাথে চলছিল।
একপর্যায়ে ছোট ভাই মারা গেলে হযরত আলী মন্টু গ্রামের প্রভাবশালী পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর থেকে ছোট ভাইয়ের ৩ কন্যা সন্তানকে বিরত করতে প্রাণপন চেষ্টা করছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপার মহোদয় বরাবর আবেদন করলেও অদ্যাবধি সমাধান পাননি ভুক্তভোগি পরিবার।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, হযরত আলী পৈত্রিক সম্পত্তি গ্রাস করতে অন্যান্য ভাই বোনদের ফাঁকি দিয়ে নিজের মনমত বন্টননামা করে দখল করে আসছে। বর্তমানে উক্ত জমিতে পারিবারিক কবরস্থান থাকায় তিনি ওয়ারিশ হিসাবে সেই জমি না নিয়ে ছোট ভাইকে দিতে চাই। আর দখল করতে চান পুকুরটি।
প্রতিবেশীরা জানান, হযরত আলী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গ্রামের প্রভাবশালীদের কয়েকজনকে হাত করে শরিকদের ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছেন। বাড়ির গাছপালা ফল ফলাদি সবাই ভোগ করলেও হযরত আলী জবর দখলের হীন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ওয়ারিশগন বাড়ি থেকে রাস্তায় যাতায়াতের পথে মাটি ভরাট করতে গেলে থানা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মাটি ভরাটে বাধা সৃষ্টি করেছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত হযরত আলী জানান, আমার ছোট ভাইকে মানবিক কারনে মাছ দিয়েছিলাম এবং একসাথে ছিলাম। এখন বন্টন নামা অনুযায়ি যে যেখানে স্বত্ত্ব পাবে সে সেই ভাবে দখল করবে।
এ ব্যাপারে গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের ব্যাপারে সালিশ করা হয় কিন্তু কেউ সেটি না মানলে কিছু করার থাকে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌর্সমী খানম বিষয়টির ব্যাপারে আবারো আবেদনের জন্য পরামর্শ দেন।