চামড়া কিনে তা ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা
এম চোখ ডট কম, ডেস্ক :
লবণ কিনতে না পেরে চামড়া ফেলে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে গতকাল ঈদের দিনে স্বল্প মূল্যে চামড়া কেনাবেচা হলেও আজ চামড়া কেনা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন পশু কোরবানীকারী ও মৌসূমি ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, এবারের ঈদুল আযহায় মেহেরপুর জেলায় প্রায় এক লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। মেহেরপুর শহরের তহবাজার, গাংনী সবজি বাজার ও বামন্দী বাজারের কয়েকটি দোকানে চামড়া কেনেন স্থায়ী ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান ঈদের দিন বিকেল থেকে রাত অবধি চামড়া কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। ছাগলের চামড়া প্রতি পিস ৫০-৭০ টাকা এবং গরুর চামড়া প্রকারভেদে ৩০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। তবে সেই চামড়া সংরক্ষণ করতে পারছেন না চামড়া ব্যবসায়ীরা।
মেহেরপুর জেলায় দীর্ঘদিন ধরে চামড়ার আড়ত ব্যবসা করছেন আব্দুর রশিদ। গাংনী সবজি বাজারে সরজমিন গিয়ে দেখা যায় আব্দুর রশিদের আড়াতের আশেপাশে যত্রযত্র পড়ে আছে বিভিন্ন আকারের চামড়া। লবণ না দেওয়ায় ইতিমধ্যে অনেক চামড়াতে পচন ধরেছে।
জানতে চাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করে চামড়া আড়তদার আব্দুর রশিদ জানান, দীর্ঘ সময় ধরেই চামড়ার ব্যবসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। ঢাকার ট্রেনারী মালিকদের কাছে অনেক টাকা পড়ে আছে। ওই টাকা তোলার আশা নিয়ে প্রতি বছর চামড়া কিনে পাঠানো হয়। এতে প্রতি বছর বকেয়া কিছু পাওয়া গেলেও নতুন বকেয়া থাকে। এবার তারা ঈদের আগে টাকা দিতে চাইলেও ট্রেনারি বন্ধ করেছে ঈদের বেশ কয়েকদিন আগে থেকে। স্থানীয় মৌসূমি ব্যাপারীদের কাছ থেকে বকেয়া চামড়া কেনা হয়েছে। চামড়া ব্যবসায় স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী পথে বসেছে বলেও জানান বর্ষিয়ান চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ।
একই বাজারের চামড়া আড়তদার সানোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনারি হাউজ থেকে বকেয়া টাকা না দেওয়ায় লবণ কেনার টাকা নেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। ফলে কেনার পরেও চামড়া সংরক্ষণ করাতে না পেরে তা ফেলে দিতে হচ্ছে চামড়া ব্যবসায়ীদের।
পশুর শরীর থেকে চামড়া ছাড়ানোর ছয় ঘন্টার মধ্যে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয় উল্লেখ করে সানোয়ার হোসেন বলেন, আগের চেয়ে লবণের দাম বেড়েছে। তাই লবণ কিনতেও অনেক টাকার প্রয়োজন। লবণ কেনার সামর্থ্য না থাকায় অনেক চামড়া পচন ধরেছে। এগুলো সবই ফেলে দিতে হচ্ছে।
এদিকে ঈদের দিনের মত আজ শুক্রবারও অনেকে কোরবানি করেছেন। তারা চামড়া নিয়ে বিভিন্ন বাজারে ঘুরলেরও ক্রেতা মিলছে না।
ছাগল কোরবানীর দেওয়া চৌগাছা গ্রামের রইচ উদ্দীন জানান, ব্যবসায়ীরা সাফ জানিয়েছে দিচ্ছেন তারা আর চামড়া কিনবেন না। এখন এই চামড়া ফেলে দেওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।
মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, এবার মেহেরপুর জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোরবানি উপযুক্ত পশু ছিল। যার মধ্যে প্রায় এক লাখ পশু জেলার কোরবানি চাহিদা পূরণ করেছে। উদ্বৃত্ত পশু গেছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
আরও পড়ুন : ‘পর্দায় অন্য পুরুষকে চুমু খেলে জবাবদিহি করতে হবে স্বামীকে’ দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ সমুচিত নয়- গাংনীর সাহেবনগর স্কুলে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার