পেঁয়াজ চাষী মরেছে আমদানীতে আর পোয়া বারো পুঁজিপতিদের
এম চোখ ডট কম ডেস্ক:
মেহেরপুর জেলায় কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ নেই। পেঁয়াজ তোলার সাথে সাথেই চাষীদের ৮০ ভাগের উপরে পেঁয়াজ বিক্রি করে থাকেন। বিত্তবান চাষীদের ঘরে কিছু পেঁয়াজ থাকলেও তার পরিমাণ খুব বেশি নয়। পেঁয়াজ সংরক্ষণকারী ব্যবসায়ীদের হাতে রয়েছে পেঁয়াজ। ফলে পেঁয়াজের দর বৃদ্ধির সুবিধা পাচ্ছেন সংরক্ষণকারীরা। অপরদিকে ভরা মৌসূমে পেঁয়াজ আমদান করায় লোকসান গুনতে হয়েছে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী চাষীদের। সঠিক সময়ে আমদানী না করায় পেঁয়াচ চাষীরা মরেছে আর পোয়া বারো পুঁজিপতিদের; এ মন্তব্য সাধারণ পেঁয়াজ চাষীদের।
জানা গেছে, ভরা মৌসূমে অথাৎ মার্চের শুরুতে পেঁয়াজ আমদানির ফলে পেঁয়াদের দর পতন হয়। পাইকারীতে ১৭-১৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন চাষীরা। আমদানী বন্ধ হওয়ায় এখন পেঁয়াজের দর বেড়েছে। মেহেরপুর জেলায় পাইকারীতে ৩২-৩৩ টাকা এবং খুচরা ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে এর সুফল পাচ্ছেন না পেঁয়াজ উৎপাদনকারী চাষীরা। দরিদ্র চাষীদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে যারা সংরক্ষণ করেছেন তারাই মূলত বেশি দরের সুবিধা পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন তেলের অস্থিরতা না কাটতে চোখ রাঙাচ্ছে পেঁয়াজ-রসুন
গাংনীর গোপালনগর গ্রামের বর্গা চাষী আব্দুল জাব্বার এ মৌসূমে ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছিলেন। এবার তার বড় ধরনের লোকজন হয়েছে বলে জানান এই পেঁয়াজ চাষী।
তিনি জানান, জমি লিজ থেকে শুরু করে পেঁয়াজ ঘরে তোলা পর্যন্ত বিঘায় খরচ প্রায় ৩০ হাজার টাকা। বিঘায় এবার ফলন ছিল প্রায় ৮০ মণ। পেঁয়াজ তোলার সাথে সাথেই বিক্রি করেছেন ১৭ টাকা কেজি। ফলে প্রতি বিঘায় তার লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
নওপাড়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষী রুবেল হোসেন জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছিলেন। তার ঘরে দুই বিঘা জমির পেঁয়াজ রয়েছে। চাষের খরচ জোগানোর জন্য তিনি কিছু বিক্রি করেছেন। আর বাড়তি দরের আশায় কিছু পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন।
রুবেল হোসেন বলেন, পেঁয়াজ বীজ, সার ও কীটনাশক বাকিতে কেনা হয়। ফলে পেঁয়াজ তোলা শুরু হলেই বাকি পরিশোধ করা হয়ে থাকে। যার কারণে চাষীরা পেঁয়াজ সংরক্ষণে রাখতে পারে না।
পেঁয়াজ আমদানী বন্ধের পর হঠাৎ দর বৃদ্ধি পেলেও তা স্থীতিশীল। দুই সপ্তাহ আগে দর বৃদ্ধির পর ৪০ টাকার নিচে রয়েছে পাইকারী দর। যথা সময়ে আমদানী করা হলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। অপরদিকে পেঁয়াজের ঘাটতি কমতে থাকবে। নয়তো পেঁয়াজ চাষী মরেছে আমদানীতে এই চিত্র বারবার দেখতে হবে। এমন মন্তব্য সাধারণ চাষীদের।
চাষীরা জানান, গেল বছর পেঁয়াজের দর বেশি থাকায় চাষীরা আবাদ বৃদ্ধি করেছেন। প্রতি বছর কতো উৎপাদন আর চাহিদা সেই হিসেবে করে আমদানী করতে হবে। আর কখন আমদানী করতে হবে সেই বিষয়টিও মূখ্য। দেশের চাষীরা সুযোগ পেলে পেঁয়াজে স্বংসম্পূর্ণতা অর্জন করা সম্ভভ বলে মনে করেন চাষীরা।