এম চোখ ডট কম:
ভোরে গানের সুরে মানুষের ঘুম ভাঙ্গানো কিংবা কাক পাখি তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ানোর দৃশ্য গ্রামের মানুষের কাছে অতি পরিচিত। বন বাদাড়ে হিংস্র কোন প্রাণির উপস্থিতিতে অন্যরকম সুর করে আশেপাশের পাখ পাখালিদের সতর্ক করার কাজটি করে তারা। এছাড়াও সবচেয়ে যে মূল্যবান কাজটি করে তা হচ্ছে আমাদের ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় নিধন। যার ফলে তাকে ফসলের অতন্ত্র প্রহরি বলা হয়ে থাকে। এর নাম হচ্ছে ফিঙে। বেপরোয়া গতির ছন্দের রাজা কিংবা পাখির রাজা বলেও তার পরিচিতি রয়েছে।
ফিঙে পাখির ইংরেজী নাম হচ্ছে King Crow or Black Drongo. কালো ফিঙে রাজকীয় কাক হিসেবেও পরিচিত। এশিয়ায় বাস করা ড্রঙ্গে পরিবারভুক্ত ছ্টো গানের পাখি হচ্ছে এই ফিঙে। দক্ষিণ-পশ্চিম ইরান থেকে শুরু করে ভারত, শ্রলিংকা হয়ে দক্ষিণ চীন ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত কালো ফিঙে দেখতে পাওয়া যায়।
ফিঙের মাজার রং কালো আর দু’ভাগ করা লেজ দিয়ে একে সহজেই শনাক্ত করা যায়।
সুত্র: উইকিপিডিয়া
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামের মানুষ তাকে ফিঙে রাজা নামের পাশাপাশি কোন কোন অঞ্চলে হ্যাচ্চা পাখি নামে চেনে।
গ্রামের মাঠে যখন গরু, ছাগল চের বেড়ায় তখন ফিঙে রাজারা তাদের পিঠে বসে। গবাদি পশুর পিঠ থেকে উড়ে গিয়ে পোকামাকড় ধরে খায়। এছাড়াও মাঠে গাছগাছালিতে কিংবা ফসলে ক্ষেতে পুতে দেওয়া বাঁশের আগায় বসে পোকামাকড় ধরে। এ দৃশ্য গ্রাম বাংলার মাঠে মাঠে লক্ষ্যণীয়।
ফিঙে পাখির চরম শত্রু হলো চিল আর কাক। এ ধরনের কোন পাখি ফিঙের বাসার কাছ দিয়ে গেলে আক্রমণের শিকার হয়। নিজের আবাসস্থলের কাছে তারা কাউকে সহ্য করে না।
বিশে^ ২৩ প্রজাতির ফিঙের মধ্যে বাংলাদেশ ৬টি প্রজাতি দেখা যায়। লেজ থেকে ঠোট পর্যন্ত ধরে এর দৈঘ্য ২৮ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার। প্রজনন সময় মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত। উচু গাছের ডালে অথবা গাছের খোড়লে বাটি আকৃতির বাসা তৈরী করে ৩ থেকে ৪টি ডিম পাড়ে মা ফিঙে। ডিম ফুটে বাচ্চা হতে সময় লাগে ১৩ থেকে ১৪ দিন।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, একটি ফিঙে যে পরিমাণ পোকামাকড় খাই তা অন্য প্রজাতির পাখি চেয়ে কয়েকগুন বেশি। ফসলের পাশে বসার জায়গা পেলেই ফিঙে দেখা মেলে।
প্রকৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক পাখি। ফিঙে পাখি এখনও অনেক দেখা মেলে। জীব বৈচিত্র রক্ষা আর ফসলের নিরাপত্তার জন্য ফিঙে পাখির অবদান অপরিসীম।
-মাজেদুল হক মানিক
ফিঙে পাখির যুদ্ধ দেখুন :
1 comment
[…] জেনে নিতে পারেন ফিঙে পাখি সম্পর্কে […]