১৮ বছরের কোন পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না- আমজাদ হোসেন
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন বলেছেন, ১৮ বছর দেশে যা হয়েছে তা কারও অজানা নয়। তবে পুলিশ ও প্রশাসনের অনেকে সেই একইভাবে চলে যাচ্ছেন। সেই ১৮ বছরের কোন পুরাবৃত্তি আমরা হতে দেব না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গাংনীতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
বক্তৃতায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আমজাদ হোসেন বলেন, আপনার ভাল সময়ও আমার সাথে ছিলেন আবার খারাপ সময়ও ছিলেন। সাংবাদিক ভাইয়েরাও আমাদের সাথে ছিলেন। আমাদেরকে যখন শিকল বেড়ি দেওয়া হয়েছে তখন সাংবাদিকরা তা তুলে ধরে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। কোমরে রসি দিয়ে আমাদেরকে জেলখানায় নেওয়া হয়েছে। ১৬/১৭ বছর আমরা অসহনীয় জীবন-যাপন করেছি। মুখের ভাষা হারিয়ে গিয়েছিল। সেই ভাষা ফিরিয়ে আনার জন্য আমার ডাকে আপনার রাজপথে নেমেছিলেন। আগামিতেও যেকোন অপশক্তির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ লড়াই করার জন্য প্রস্তুত আছি।
বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাত ধরে এদেশে ভোটের অধিকার এবং বাকস্বাধীনতার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উল্লেখ করে আমজাদ হোসেন বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি মানুষের জন্য কাজ করে। এদেশের সাধারণ মানুষের উন্নয়ন শুরু হয়ছিল শহীদ প্রেসিডেন্টে জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে। আমরা চায় মানুষ শান্তিতে থাক, সুথে থাকুক। প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই একমাত্র বিএনপি করে আসছে। এদেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যহত থাকবে।
স্থানীয় রাজনীতির বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির দুঃসময়ের এই সাবেক এমপি বলেন, কোন এক ব্যক্তি ১০ বছর পরে আসল আর ওসি সাহেবকে দুই লাখ টাকা দিয়ে খালেদা মোড় থেকে গাংনী বাস স্ট্যান্ড ঘুরে গেলেন। কিভাবে কি করে মনোয়ন নিয়ে এসে গাংনীতে সাত হাজার ভোট নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন। গাংনীতে বিএনপির সাত হাজার ভোট নয়। গাংনী হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি। গাংনীতে বিএনপি কোনদিনই পরাজয় বরণ করে নাই। আব্দুল গণিকে আমরা নিয়ে এসেছিলাম। তখন তাকে কেউ চিনত না। আমরা গাংনীর বিএনপির তবুও তাকে বিজয়ী করেছিলাম।
প্রশাসন ও পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনারা সরকারি দায়িত্ব পালন করতে এসেছেন। এখানে কোন প্রকার অনিয়ম করবেন না। যদি করেন তাহলে এখানে সমাবেশ হবে না। উপজেলা ঘেরাও করে সমাবেশ হবে। ১৭টি বছর ধরেই তো বিভিন্ন সময় জেল খেটেছি এবং আওয়ামী দুঃশাসনের ১৯টি মামলা খেয়েছি। গাংনীর মাটি ও মানুষের ভালবাসায় এখনও টিকে রয়েছি। ভবিষ্যতেও মানুষের সাথেই থাকব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দীন। অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আমিরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, নুর ইসলাম, নারীনেত্রী আসমতারা, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম, সুমন, কৃষকদল নেতা সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনের উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন। উত্তরপাড়ায় আমজাদ হোসেনের বাস ভবনের সামনের সড়ক ও আশেপাশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে বক্তৃতা করেন আমজাদ হোসেন। সমাবেশের পর এক আনন্দ র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়। র্যালিতে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে গেয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উৎসবে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।