উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত
ধান আবাদে আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক আমাদের কৃষকরা। ফলে জাত নির্বাচন থেকে শুরু করে এর গুণাগুন সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে চায়। এই জাতের মধ্যে আবার কাণ্ড শক্ত, ভালো মানের বিচুলি, চিকন চাউল, ঝরঝরে ভাত ইত্যাদি বিবেচ্য। আর এসব সুবিধা যদি পেতে চান তাহলে আপনার জন্য ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৮৭ ও বিনা ধান ১৭ উৎকৃষ্ট আমন ধানের জাত। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত সম্পর্কে জেনে নিতে পুরো লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন আশা রাখি।
বাংলাদেশে তিন মৌসূমে ধান আবাদ হয়ে থাকে- আমন, আউশ ও বোরো। আউশ ধান আবাদ খুব বেশি না হলেও আমন আর বোরোতে বেশিরভাগ কৃষক আবাদ করে থাকেন। স্থানীয়ভাবে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হওয়া ধান বীজ হিসেবে বিক্রি হয়। এসব বীজ কিনে প্রতারিত হন চাষীরা। তবে যারা জাত সম্পর্কে একটু খোঁজ নিয়ে চাষ করেন তারা বেশি লাভ পেয়ে থাকেন। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত নির্বাচন করা এখন আপনার হাতের মুঠোয়। গুগলে সার্চ করলে হাজার হাজার তথ্য পাবেন। এ লেখার মধ্যে পর্যায়ক্রমে উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত ও এর সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
আমন ধান
লেখার শুরুতে আমন ধান সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক। বিষয়টি সবারই জানা। একটু মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র। জৈষ্ঠ্য মাস থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত আমন মৌসূম ধরা হয়। নিচু এলাকায় চৈত্র-বৈশাখ মাসে জমি চাষ করে আমনের বীজ বপণ করার প্রচলন রয়েছে। তবে জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাসে বীজ তলায় বীজ বপণ এবং শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে জমিতে রোপণ করা হয় রোপা আমন ধান। আর এই ধান কাটা হয় অগ্রাহায়ণ-পৌষ মাসে। জাতের ও জীবনকালের বৈচিত্রতায় এখন রোপা আমন ধান চাষের প্রচলন বেশি।
আমন ধানের জাত পরিচিতি
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ৪৬ টি এবং পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত ৭ টি জাত আমন মৌসূমে চাষের জন্য উন্মুক্ত। এ জাতগুলোর বেশ কয়েকটি গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশে আবাদ হচ্ছে। দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান চাউলের মধ্যে মধ্যে নিশ্চিত করেছেন ধানের জাত উদ্ভাবক বিজ্ঞানীরা। অপরদিকে সময়োপযোগী জীবনকাল নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে চাষীরা তাদের সুবিধামতো সময়ে ধান আবাদ করা ছাড়াও একই জমিতে বছরে অনন্ত তিনটি ফসল আবাদ করতে পারেন। আমন মৌসূমে তিনটি উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত সম্পর্কে আজকে জেনে নিব।
নাবী জাতের আমন ধান কোনটি
আমন মৌসূমের ধান কাটার পর এলাকা ও আবাদি জমির ভিন্নতায় পরবর্তী ফসলের ভিন্নতা দেখা দেয়। আমন কর্তন করে কেউ গম বপণ করেন আবার কেউ জমি ফেলে রেখে পরবর্তীতে বোরো ধান আবাদ করেন। পরবর্তী ফসল আবাদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয় যদি জাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকে। নাবী জাতের আমন ধান কোনটি তা হিসেবে করে চাষীরা আবাদ করেন একই জমিতে বেশি ফসল আবাদের লক্ষ্যে। আজকে যে তিনটি জাত নিয়ে আলোচনা করবো তা নাবী জাতের ধান।
আমন ধান চাষ পদ্ধতি
ধান আবাদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ চাষী প্রথাগত চাষের উপর নির্ভরশীল। মাঠ পর্যায়ে আধুনিক ধানের জাত সম্প্রসারণ করতে গিয়ে আমি এ বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। চাষীরা তাদের বাপ দাদার চাষ পদ্ধতির বাইরে যেতে চান না। প্রকৃত পক্ষে জমির সুষম সার প্রয়োগে চাষীরা মোটেও আগ্রহী নয়। তার নিদিষ্ট কয়েকটি সার দিয়েই আবাদ শেষ করেন। এতে জমি যেমনি অনুর্বর হচ্ছে তেমন বাড়ছে রাসায়নিক সারের খরচ। তাই আপনি যদি সচেতন কৃষক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে আদন ধান চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া উচিত। ব্রি ও বিনা এর ওয়েব সাইটে আমন ধান চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এ ছাড়াও আপনার নিকটস্থ কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে পারবেন। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত বাছাই করা আবাদে নামার প্রথম কাজ।
আমন ধানের জাত সমূহ
আজকের এই লেখায় উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত নিয়ে যে আলোচনা তা হচ্ছে- ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৮৭ এবং বিনা ধান ১৭। এই তিনটি জাত গেল কয়েক বছর ধরে আমি নিজে আবাদ করেছি। বীজ উৎপাদনের তাগিদে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন মাঠে আবাদ ঘুরে দেখেছি। অপরদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ জাতগুলো আবাদ করেছেন তারাও উচ্ছসিত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমন মৌসূমে ব্রি ও বিনা যে জাতগুলো উদ্ভাবন করেছে তার মধ্যে এ জাত তিনটি সেরা জাত বলা যায়। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত তিনটির যেকোন একটি আবাদ করে আপনি লাভবান হতে পারেন।

ব্রি ধান ৭১। খরা সহনশীল জাতটি কৃষকের আস্থা অর্জন করেছে।
ব্রি ধান ৭১
ব্রি ধান ৭১ হচ্ছে খরা সহিষ্ণু একটি অসাধারণ জাত। এর জীবনকাল ১১৪-১১৭ দিন। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৭-১০৮ সেন্টিমিটার। ধানের দানার রং খড়ের মতো, আকার মাঝারী মোটা। ব্রি ধান ৭১ এর চাউলে এমাইলোজের পরিমাণ ২৪.০%। গাছের কাণ্ড শক্ত তাই ঝড় বৃষ্টিতে সহজেই হেলে পড়ে না। ফলে কাটা মাড়াই সহজ।
এ জাতটি খরা সহিষ্ণু। প্রজননের সময় তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত যদি বৃষ্টি নাও হয় তবুও ফলন কম হবে না। প্রতি হেক্টরে ৬ মেট্রিক টনের বেশি ফলন দিতে সক্ষম। অথাৎ এক বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ২০ মণের উপরে ফলন পাওয়া যায়। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত হিসেবে ইতোমধ্যে চাষীদের আস্থা অর্জনে করেছে এ জাতটি।
এ জাতটির বিশেষ প্রয়োজনীয়তা হলো- ব্রি ধান ৭১ ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে রোপণ করেও ভালো ফলন পাওয়া যায়। ধান কেটে গম, মসুর ও অন্যান্য ফসল আবাদ করা যায়। এছাড়াও যেসব অঞ্চলে পাট আবাদ বেশি হয় সেই অঞ্চলের জন্য জাতটি অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ণ। পাট কাটার পরে এ জাতটি আবাদযোগ্য। অপরদিকে অগ্রিম আবাদের মাধ্যমে ধান কেটে সহজে সরিষা এবং সরিষা কর্তন করে বোরো ধান আবাদে যাওয়া যাবে। এ ধরনের জাতের ধান আবাদ করা গেলে বছরে একই জমিতে সহজেই তিন আবাদ করা সম্ভব। যা চাষীর জন্য অত্যান্ত লাভজনক।

বিনাধান ১৭ যেকোন মানুষকেই আকৃষ্ট করে।
বিনাধান ১৭
উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত এর মধ্যে অন্যতম একটি জাত হচ্ছে বিনাধান ১৭। বিনা ধান ১৭ হচ্ছে ব্রি ধান এর মতই জীবনকাল ১১২-১১৮ দিন। পার্থক্য হচ্ছে ব্রি ধান ৭১ মোট আর বিনা ধান ১৭ হচ্ছে চিকন। গাছের আকার একটু ছোট। বিনাধান ১৭ এর বিশেষত্ব হচ্ছে- এ জাতটি আবাদে অন্যান্য জাতের চেয়ে ৩০% পানি কম লাগে। আলোক অসংবেদশীল বিনাধান ১৭ আধুনিক ধানের সকল গুণাগুণ বিদ্যমান।
এ জাতের বিশেষ বৈশিষ্ঠ হচ্ছে চাল চিকন ও লম্বা। ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু। ফলে মোটা ধানের চেয়ে বাজার দর বেশি। ব্রি ধান ৭১ এর মতই আবাদ করে বছরে একই জমিতে তিনটি ফসল ফলানো সম্ভব। বিনাধান ১৭ ফলন হেক্টরে ৮ মেট্রিক টন পর্যন্ত। বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ২৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। যা আমন মৌসূমে সবচেয়ে বেশি ফলনের চিকন ধান।
ব্রি ধান ৭১ এর মতই আবাদযোগ্য জাত হচ্ছে বিনাধান ১৭। এ জাতটি অগ্রিম আবাদ করে কর্তনের পর সরিষা আবাদ এবং সরিষা তুলে বোরো ধান আবাদ করা যায়। অপরদিকে পাট কেটে দেরিতেও আবাদ করা যায়। এতে ফলনের তেমন একটা তারতম্য হয়না। এ জাতটি খাটো ও কাণ্ড শক্ত তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগেও হেলে পড়ে না।
বিনাধান ১৭ তে যখন ফুল আসে তখন বিশেষ সতর্ক থাকা দরকার। এ জাতে ফলস স্মার্ট বা লক্ষèীর গু আক্রমণ করে থাকে। তাই আগে থেকেই যদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাহলে ধানের ক্ষতি হবে না।
ব্রি ধান ৮৭
উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত যেগুলো রয়েছে তার মধ্যে এই জাতটির চাল চিকন ও সরু। ব্রি ধান ৮৭ হচ্ছে ব্রি উদ্ভাবিত আমন মৌসূমের চিকন চালের জাত। এ জাতটি অসাধারণ একটি জাত বলে আখ্যায়িত করে থাকেন এর আবাদকারীরা। এর চাল যেমনি চিকন তেমনি ভাতের এক ধরনের গন্ধ আছে যা এক সময় দেশীয় সুস্বাদের ভাতের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ব্রি ধান ৭১ ও বিনাধান ১৭ এর মতই ব্রি ধান ৮৭ এর জীবনকাল কম। এর জীবনকাল ১২৫-১২৮ দিন। পূর্ণ গাছের গড় উচ্চতা ১২২ সেন্টিমিটার। বিচুলির আকার স্বর্ণা ধানের চেয়ে বড়। তাই গো খাদ্য হিসেবে বেশ লাভজনক। অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭%। ধান চিকন ও সরু। চাল সরু এবং ভাত ঝরঝরে।
ব্রি ধান ৮৭ আবাদের ক্ষেত্রেও রয়েছে চাষীদের স্বাধীনতা। চাষী তার পছন্দমতো সময়ে আবাদ করতে পারেন। যদি আষাঢ় মাসে চারা দেওয়া হয় তাহলে কার্তিক মাসে কাটার পরে সরিষা বপণ করা যায়। আবার যদি শ্রাবণ মাসের শেষে চারা দেওয়া হয় তাহলে ধান কেটে মসুর ও গম আবাদ করা যায়। তাই আপনার সুবিধামতো সময়ে আবাদ করার মাধ্যমে একই জমিতে বছরে তিনটি ফসল ফলানো সম্ভব।
ব্রি ধান ৮৭ এর ফলন ৬ মেট্রিক টনের উপরে। বিঘায় ফলন পাওয়া যাবে ২০ থেকে ২৩ মণ পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন মাঠে আবাদে এমন ফলন পাওয়া যাবে। এমন উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত আপনার হাতে থাকে তাহলে আপনি আর পাঁচজন কৃষকের থেকে এগিয়ে যাবেন।
আমন মৌসূমে চিকন ধানের জাত নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে ব্রি ধান ৮৭ এবং বিনাধান ১৭ চিকন চালের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। এছাড়াও স্বল্প মেয়াদের জাতে অধিক ফলন দেশের ধান উৎপাদনে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। দেশের জন্য যেমনি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি চাষীরা আগের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
আরও পড়ুন মেহেরপুর আবহাওয়ার পূর্বাভাস ।। কেমন যাবে আগামি ১৫ দিন
আমন ধানে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আমন ধানে সার প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ব্রি ও বিনা এর ওয়োব সাইট ঘুরে দেখতে পারেন। এছাড়াও স্থানীয় উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও তথ্য নিতে পারেন। সার প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে বুঝেই চাষে নামা উচিত বলে মনে করি। সুষ্ঠু সার ব্যবস্থাপনা না থাকলে বেশি সার দিয়েও কাঙ্খিত ফলন আসে না। উপরন্ত ফসলের ক্ষতি হয়। তাই সার প্রয়োগ পদ্ধতি সর্ম্পকে একটি ধারণা নিন যা আবাদে সহায়ক হবে।
আমন ধান কাটার সময়
আমাদের দেশে আমন ধান কাটার সময় হচ্ছে কার্তিক মাস থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত। এক সময় অঘ্রায়ণ-পৌষ মাসে আমন ধান কাটার পরে পিঠা পুলির উৎসব চলতো গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে। আমন ধান ছিল দেশের একমাত্র ধান। তবে আধুনিক ধান চাষ পদ্ধতি এবং স্বল্প জীবনকালীন জাত উদ্ভাবনের ফলে এখন কার্তিক মাসেই আমন ধান কাটা যায়। অনেক চাষী আশি^ণ মাসে আমন ধান কেটে সরিষা আবাদের প্রস্তুতি নেন। আপনি কখন ধানের চারা দিবেন তার উপরে নির্ভর করবে কখন আমন ধান কাটতে পারবেন। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত যেগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সেগুলো কখন কাটবেন তা আপনার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে।
উপসংহার
যার কাছে ফসলের যতোবেশি আপডেট তথ্য থাকে তিন ততো বেশি সফল কৃষক। উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত বিষয়ে এই লেখার মধ্যে আমন ধান চাষ পদ্ধতি, নাবী জাতের আমন ধান কোনটি, আমন ধানের জাত পরিচিতি, আমন ধান, আমন ধানের জাত পরিচিতি, আমন ধান কাটার সময়, আমন ধানে সার প্রয়োগ পদ্ধতি ও আমন ধানের জাত সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ লেখার মাধ্যমে আমন মৌসূমে ধান আবাদে আপনার পছন্দের জাতটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভবিষ্যতে আরও নতুন জাত উদ্ভাবন হলে আমরা তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
-মাজেদুল হক মানিক
পরিচালক
স্বদেশ সীড, গাংনী, মেহেরপুর