এম চোখ ডট কম, মুজিবনগর:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ হ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেছেন, যারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে চায় তাদের মুখেই কেবল শ্রীলংকার দুর্দশার উদাহরণ। এক সময় পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান হিসেবে দেখতে চেয়েছিল। বানাতে চেয়েছিল পাকিস্তানি বাংলাদেশ। তাদের ষড়যন্ত্র তো একাত্তরের আগে থেকেই চলমান।
বক্তৃতায় বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে তিঁনি বলেন, অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলেন দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক বলে দাবি করেন তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনি। পাকিস্তানির আইএস এর এজেন্ট, আন্তর্জাতিক মুরব্বি ও দেশীয় চক্রান্তকারী-যড়যন্ত্রকারীরা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অস্তিত্বকে বিপন্ন করা।
জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মুশতাককে খুনী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, জাতির পিতাকে সরিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তারা পাকিস্তানিদের সহায়তায় ধাপে ধাপে অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা করে। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি যাদের শ্রদ্ধাবোধ তারাই দেশবিরোধী অপশক্তি। স্বাধীনতার চেতনার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। এই হোক মুজিবনগর দিবসের শপথ।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন বিএনপি-জামায়াতের সময়ে মুজিবনগর দিবস পালিত না হওয়া অত্যান্ত দু:খজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকার গঠিত না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এই সরকার হচ্ছে আমাদের অস্তিত্ব। তাই যারা রাষ্ট্রের জন্ম মানবে না, সংবিধান মানবে না এবং রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে স্বীকার করবে না তারা তো দেশ বিরোধী। রাষ্ট্র কাউকে এ অধিকার দিতে পারে না যে কেউ এসব মানবে না। কেউ যদি এসব অমান্য করে তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালনে এর আগে স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পরে পতাকা উত্তোলন ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা গীতিনাট্যের মাধ্যমে তুলে ধরে বাংলাদেশ আনছার আর্কেষ্টা দল।
শেখ হাসিনা মঞ্চে মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার/প্রবাসী সরকার/মুজিবনগর সরকার গঠন হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর (ততকালীন বৈদ্যনাথতলা) আম বাগানে উপ রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মন্ত্রী হিসেবে তাজ উদ্দীন আহম্মেদ, ক্যাপ্টেন এম মনছুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ শপথ গ্রহণ করেন। এই সরকারের নেতৃত্বে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। শপথের এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মুজিবনগরে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।