331
এম চোখ ডটকম বারাদী: বারাদী : ঢাকার উত্তরায় ফ্লাইওভারের নীচে ক্রেন দূর্ঘটনায় নিহত রুবেল হোসেনের বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামে। ২২ বছর আগে গার্মেন্টেসে চাকুরির জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে গ্রাম ছাড়েন তিনি। বর্তমানে বেশ কয়েকটি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। যদিও এলাকায় তিনি আয়ূব হোসেন নামে পরিচিত। এদিকে দূর্ঘটনায় মৃত্যুর পর তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। জানা গেছে, রুবেল হোসেনের পরিবারে ৯ ভাই ও দুই বোন। ভাইদের মধ্যে তিনি ৮ম। আগে এক ভাই মারা গেছে। রুবেল হোসেনের দুই সন্তান। বড় ছেলে হৃদয় আলী ব্যবসা করেন ও ছোট মেয়ে রত্না এবার এইসএসসি পরিক্ষার্থী। সোমবার হৃদয়ের বৌভাত শেষে ছেলে ও বউকে নিয়ে প্রাইভেটকারে রওনা দেন তিনি। এ সময় তিনি প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন। পরে উত্তরার নির্মানাধীন ফ্লাইওভারে ক্রেন দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় আহত হন তার ছেলে ও ছেলের বউ। তার স্বজনদের দাবি হৃদয়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এদিকে দূর্ঘটনার ১০/১২ দিন আগে রুবেল হোসেন তার নিজ গ্রামে আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করে যান বলে দাবি স্বজনদের। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বজনদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মৃত্যুর খবরটি মসজিদের মাইক থেকে প্রচার করা হচ্ছে। চলছে দাফনের সব প্রস্তুতি। নিহতের বোন রেহেনা খাতুন জানান, ২২ বছর আগে গ্রাম থেকে রুবেল হোসেন ঢাকায় চলে গেলেও এখন পরিবারের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। প্রায় ঈদে পরিবারসহ তিনি গ্রামে আসেন। গেল কয়েকদিন আগেও ভাই গ্রামে এসেছিলেন। সকলের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে ঢাকায় ফিরে যান। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানের এমন দূর্ঘটনায় তার মৃত্যু বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেননা স্বজনেরা। তাদের দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে তার ভাই সহ তাজা ৫ টি প্রাণ ঝরে গেলে। এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি তাদের। নিহতের ভাতিজা তানিয়া সুলতানা দাবি করেন, এটি একটি হত্যাকান্ড। কারণ সড়কে কোন নিরাপত্তা ছাড়াই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিভাবে এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছিলেন। সড়কটির নির্দিষ্ট কিছু এরিয়া ফিতা দিয়ে বন্ধ করে দিলে এমন দূর্ঘটনা কখনই ঘটতো না। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহ যারা সেখানে কর্মরত ছিলো এ দূর্ঘটনার জন্য তারাই দায়ি বলে তিনি দাবি করেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি। নিহতের ভাতিজা আসলাম মিয়া কঁাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলেন, তার চাচার এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেননা। তারা সমবয়সী। একসাথে খেলাধুলা থেকে শুরু করে শৈশবের বড় একটি সময় কেটেছে তার সাথে। অথচ তার এমন করুণ মৃত্যু। পরিবারের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা গেছে লাশ নেওয়ার জন্য। রাতেই লাশ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরবে বলে দাবি করেন তিনি। লাশ ফিরলেই গ্রামেই দাফনের ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান। জেলা প্রশাসক ডঃ মুনছুর আলম খান জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে তেমন কোন সহযোগীতা এখন পর্যন্ত চাননি। সহযোগীতা চাইলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সূযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান। ঢাকায় একাধীক নারী তার স্ত্রী বলে দাবি করেছেন এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক বলেন, এমনটি হলেতো কতৃপক্ষ কারো হাতে লাশ তুলে দেবেননা। যথযথ নিয়ম মেনে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রকৃত স্বজনদের হাতে লাশ লাশ তুলে দেবে বলে জানান।