গাংনীতে ছাত্রী উধাও হওয়ার রহস্য উন্মোচন ॥ আটক তিন যুবকের নামে মামলা
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
গাংনী উপজেলার বামন্দী দাখিল মাদ্রাসার তিন ছাত্রী উধাও হওয়ার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। চাকুরির প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে রেখেছিল। এ ঘটনার সাথে জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সাথে পাচারকারী চক্রের আরও কয়েকজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী ঢাকার গাবতলী ও বিমানবন্দর এলাকা থেকে উধাও হওয়া তিন ছাত্রীকে উদ্ধার এবং ওই তিন যুবককে গ্রেফতার করে গাংনী থানায় নিয়ে আসা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার সনাতনপুর গ্রামের ইমদাদুল হকের ছেলে হাসান আলী (২০), শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন (২২) ও ঢাকা হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরপাড়ার চানিতা চৌধুরির ছেলে রোমন চৌধুরী (২৪)।
গাংনী থানা সুত্রে জানা গেছে, উধাও হওয়া ছাত্রীদের পরিবারের একজন বাদি হয়ে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। চাকুরির প্রলোভনে ছাত্রীদের কৌশলে অপহরণের অভিযোগ করা হয়েছে মামলার এজাহারে। গাংনী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোজিত কুমার জানান, ওই মামলার আরও কয়েকজন আসামি রয়েছে। তার মধ্যে এজাহার নামীয় আসামি ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে শাকিল ওরফে জুবাইয়ের এবং খিলক্ষেত এলাকার সুজন (৩২)।
তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া ছাত্রীদের ডাক্তারী পরীক্ষা করানোর জন্য থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল বোর্ডে প্রেরণ করা হবে। একই সাথে গ্রেফতার তিন জনকে মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আলমডাঙ্গার হাসান আলী এ চক্রের মূলহোতা। তারা কৌশলে মেয়েদের পাচার করতো বলে প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে আরও কয়েকজন। জিজ্ঞাসাবাদে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং তাদের সাথে জড়িত অন্যদের নাম পাওয়ার আশা করছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, গেল ২৮ মে গত রোববার (২৮মে) গাংনীর দেবীর গ্রামের বাড়ি থেকে বামন্দী দাখিল মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয় তিন ছাত্রী। এদের মধ্যে এক জন অষ্টম শ্রেণির এবং অপর দুজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। মাদ্রাসায় না গিয়ে তারা উধাও হয়। তাদের অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। পরে তাদের সন্ধান চেয়ে গাংনী থানায় একটি জিডি করে তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ জিডির সুত্র ধরে বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই ইসরাফিল হোসেন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ওই তিন ছাত্রীকে ঢাকার গাবতলীর একটি বাড়িতে রাখা হয়েছিল। অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাদের রাখা হয়। সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধারের পর ঢাকার বিমান বন্দর এলাকা থেকে ওই তিন যুবককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশের অভিযান দলটি।
আরও পড়ুন : গাংনীতে উধাও হওয়া তিন ছাত্রী উদ্ধার ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা : নিহত বেড়ে ৭০