গাংনীতে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ \
স্থানীয়দের বাধায় নি¤œমানের কাজ বন্ধ হলেও ঠিকাদারের ক্ষমতায় আবার শুরু
এম চোখ ডটকম,গাংনী:
ঠিকাদারের প্রতিনিধিদের ইচ্ছেমাফিক নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে গাংনী উপজেলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নির্মান কাজ এবার বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। ঢাকার স্থানীয় রড আর নি¤œমানের পাথর ও বালু দিয়ে ঢালাই কাজ করার সময় গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতকিছুর পরও বাস্তবায়নকালী প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা কেন কাজ চালানোর অনুমতি দিচ্ছেন তা নিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের ফুটবল মাঠে নির্মান হচ্ছে গাংনী উপজেলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। গ্যালারি বেজ নির্মানের সময় থেকেই নি¤œমানের রড, পাথর ও বালু নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। মাঠের পূর্ব দিকে নির্মিতব্য প্যাভিলিয়নের ঢালাই কাজ শুরু হয় শুক্রবার সকাল থেকে। প্যাভিলিয়নের বেজ নির্মান কাজ চলছিল। এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে গ্রেডের রডের সাথে ঢাকার স্থানীয় বাজারের রড। যে রড এরকম বড় প্রকল্পের কাজে ব্যবহার না করার বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
তবে নির্মানকাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা কার্যসহকারী (ওয়ার্কএসিস্ট্যান্ট) আলমগীর হোসেনের কথা কানে নিচ্ছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। ক্রীড়া পরিষদের কোন দায়িত্বশীল প্রকৌশলী এখানে অনুপস্থিত। ফলে কার্যসহকারী প্রতিবাদ করেও কুলিয়ে উঠছেন না।
এর আগে মাঠের উত্তর দিকে একই সাথে নির্মান হওয়া গ্যালারি ও প্যাভিলিয়ন নির্মানে বেজ থেকে শুরু করে পিলার পর্যন্ত ঢাকার ওই রড ও নি¤œমানের বালু পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। যা সরেজমিন পরিদর্শন করে নি¤œমানের এসব উপকরণ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন। এমপির নির্দেশনা আংশিক মেনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নি¤œমানের পাথরের পরিবর্তে কিছুটা ভাল পাথর আনে। তবে নি¤œমানের সেই বালু আর বিতর্কিত রড দিয়েই বেজ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে পূর্ব দিকে নির্মিতব্য গ্যালারি নির্মানের ক্ষেত্রে ঢাকার লোকাল রড ব্যবহার করা হবে না বলে এমপিকে আশ^স্থ করেছিলেন সেখানে দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা। অথচ শুক্রবার সকালে সেই বিতর্কিত রড দিয়েই ঢালাই শুরু হয়। এতে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।
কাজ বন্ধের বিষয়ে সাহারবাটি গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম টুটুল বলেন, ঢাকার স্থানীয় রড নি¤œমানের। এ রড দিয়ে এতবড় একটি প্রকল্পের কাজ হতে পারে না। তাছাড়া পাথর, বালু নি¤œমানের। সিমেন্টের সাথে মেশানোর সময় নিয়ম না মেনে ঠিকাদারের লোকজনের ইচ্ছেমাফিক কাজ করা হচ্ছে। ফলে এলাকার মানুষের স্বপ্নের স্টেডিয়াম এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। নি¤œমানের নির্মান সামগ্রী সরিয়ে দরপত্রে উল্লেখিত নির্মান সামাগ্রী দিয়ে কাজ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার রিপন আলী জানান, এখানে ব্যবহৃত ঢাকার লোকাল রড বুয়েট টেস্ট করা হয়েছে এবং মান ভাল বলে সার্টিফিকেট আছে। তবে তিনি এ সার্টিফিকেট দেখাতে বললে বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যান।
এদিকে এলাকার লোকজনের বাধায় কাজ বন্ধ হলেও সন্ধ্যার আগে আবারও কাজ শুরু হয়েছে। তবে কি কারনে কাজ চালু হয়েছে তার সদুত্তোর দিতে পারেননি কাজ দেখভালের দায়িতরত ব্যক্তিরা।
জানতে চাইলে ক্রীড়া পরিষদের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মান প্রকল্পের কার্যসহকারী আলমগীর হোসেন বলেন, এমপি সাহেব বলার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চট্রগ্রাম থেকে নতুন রড নিয়ে এসেছে। এ রডগুলো ভাল। কিন্তু এর সাথে ঢাকার লোকাল রড দিয়ে কাজ করছে। প্রতিবাদ করার পরও ঠিকাদারের লোকজন কথা শুনছেন না বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গাংনীর সাহারবাটি ফুলবল মাঠে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মান হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় মোট পাঁচ কোটি ৫২ লাখ ২২ হাজার ৯৯৯ টাকা ব্যায়ে এ নির্মাণ কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএস অ্যান্ড এমটি জয়েন্ট ভেন্সার (জেভি)। যা বাস্তবায়নে রয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।