গাংনী হাসপাতালে ডাক্তারদের টেস্ট বাণিজ্য !
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
একের পর এক টেস্ট করতে গিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছেন রোগীরা। তাও আবার ডাক্তারের পছন্দের ডায়গনস্টিক সেন্টারের টেস্ট ছাড়া তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ ডাক্তার মহাশয় ওখান থেকে তো কমিশন পেয়ে থাকেন। উপরোক্ত কথাগুলো বলছিলেন গাংনী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই রোগী জানান, পেটে ব্যাথা নিয়ে গাংনী হাসপাতালের এক ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। ডাক্তার তাকে নানা প্রকার টেস্ট করিয়ে আনতে বলেন। তিনি টেস্ট করানোর পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেন ডাক্তার। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে ওই ডাক্তারের পছন্দের ডায়গনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আবারও টেস্ট করিয়ে আনেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক অনেকটাই প্রকাশ্যে টেস্ট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নাকের ডগায় কিভাবে এটা সম্ভব তা নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
জানা গেছে, আউটডোর চেম্বারে রোগী দেখার সময় ডাক্তাররা রোগীদের প্রেসক্রিপশনের সাথে ধরিয়ে দিচ্ছেন ভিজিটিং কার্ড। যার সাথে ডাক্তারের পছন্দের ডায়গনস্টিকের নাম ঠিকানা রয়েছে। ওই ডায়গনস্টিক থেকে টেস্ট করানোর জন্য রোগীদের দেওয়া হচ্ছে মানসিক চাপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাংনী হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন ডাক্তার সরাসরি স্থানীয় কয়েকটি ডায়গনস্টিক সেন্টারের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। হাসপতালের ডিউটির সময়ে ডায়গনস্টিকের রোগী দেখারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা গেছে, অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেস্টের দিক থেকে বেশ এগিয়েছে। ইসিজি, এক্স-রে ও ল্যাবের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট হাসপাতালেই করানো হচ্ছে। এসবের তোয়াক্কা না করে কয়েকজন ডাক্তার নিয়মিত পছন্দের ডায়গনস্টিকের পাঠাচ্ছেন রোগীদের। টেস্টের বিপরিতে প্রতিদিন ডাক্তারদের পকেটে যাচ্ছে ডায়গনস্টিক সেন্টারের কমিশন। এতে রোগীদের খরচ বৃদ্ধি পেলেও রোগী হিসেবে ডাক্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুযোগ কম। ফলে দিনের পর দিন মুখ বুজেই এই মানসিক প্রেসার নিয়ে চলেছেন অনেক রোগী।
তবে বার বার নিষেধ করা সত্তেও কেন এটা হচ্ছে তা ভেবে পাচ্ছে না বলে জানালেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ সুপ্রভা রাণী। তিনি বলেন, বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে সমাধান করা হবে।