টাকার লোভে শিশু ছাত্ররা যখন বিপথে ।। গাংনীতে হাত পা মুখ বাঁধা ছাত্র উদ্ধার
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
১৪ বয়সী কিশোরকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার প্রস্তাব। প্রস্তাব অনুসারে সাত বছরী এক শিশুকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয় মাদ্রাসার ছাদে। মৃত্যুর মুখে পড়ে শিশু ছাত্রের বাঁচার আকুতি। ছাদে কয়েক ঘন্টা গড়াগড়ির পর টের পান প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা। তারা ওই শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করলেও মুত্যু ভয় কাটছে না ওই শিশুর মন থেকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার টেঙ্গামারী গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সাথে জড়িত কয়েক ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, টেঙ্গামারী মাদ্রাসায় হেফজখানায় লেখাপাড়া করে ছাত্ররা। সেখানে তারা রাত্রিযাপন করে একসাথে। বুধবার রাতে মাদ্রাসা ছাত্র সাব্বির হোসেন তোতাকে (১৪) অজ্ঞাত এক ব্যক্তি টাকার লোভ দেখায়। ওই মাদ্রাসার শিশু ছাত্র ওয়ালিদ হাসানকে (৭) হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাদ্রাসার ছাদে ফেলে রাখার প্রস্তাব দেয় ওই ব্যক্তি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেলে রাখতে পারলে দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি প্রস্তাব দিয়ে তোতার হাতে ১শ টাকা ধরিয়ে দিযে স্কচ টেপ কিনতে বলে চলে যায়।
সাবির হোসেন তোতা স্বীকার করে জানায়, ওই ব্যক্তির দেওয়া ১শ টাকা দিয়ে সে বৃহস্পতিবার সকালে স্কচ টেপ কেনে। ছাত্র ও শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায় শিশু ছাত্র ওয়ালিদ হাসানকে। আরেকজন ছাত্রের সাহায্য নিয়ে কৌশলে ওয়ালিদের দুই হাত-পা বাঁধা হয়। মুখে স্কচ টেপ দিয়ে আটকে ছাদে ফেলে রেখে তারা সটকে পড়ে।
এদিকে এ ঘটনায় মাদ্রাসা ও এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি কোন স্বার্থে কিসের জন্য শিশু-কিশোর ছাত্রদের এমন প্রাণঘাতি প্রস্তাব দিয়েছে সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে বেশ বিব্রত।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার ফিরোজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ৫ বছর প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে চলছে। এ ঘটনায় তারা খুবই মর্মাহত। যে ব্যক্তি এমন জঘন্য প্রস্তাব দিয়ে ছাত্রদের বিপথে নামিয়েছে তাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দাবি করেন ওই শিক্ষক।
এদিকে খবর পেয়ে গতকাল রাতে মাদ্রাসায় যায় গাংনী থানা পুলিশের একটি দল। ঘটনার সত্যাতা যাচাই ও দুস্কৃতিকারীকে খুঁজে বের করার জন্য মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি।
ওসি বলেন, ঘটনার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে পুলিশ।