দুই বউয়ের যন্ত্রণায় মোটর সাইকেল পোড়ালো স্বামী
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
দুই বউয়ের অত্যাচার চলছিল বেশ কিছু দিন থেকে। তাদের অন্যায় আবদার সামলাতে পারছিলেন না। রাগে ক্ষোভে প্রতিশোশের আগুনে পুড়ছিলেন। কোন উপায় ছিল না ইলেকট্রিক মিস্ত্রি গোলাম হোসেনের কাছে। শেষ পর্যন্ত নিজের বাইকটির উপরেই প্রতিশোধ তুললেন। মোটরসাইলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নিজের দোকান ভেঙ্গে দুই বিয়ে করার অনুশোচনা প্রকাশ করলেন।
ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী নওপাড়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি এ কাণ্ড করে সমালোচনায় আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাম হোসেন বেশ কয়েকদিন বিষন্ন অবস্থায় দোকানে আসেন। ভালো আচরণ করেন না কারও সাথে। ঠিকমতো কথাও বলেন না কারও সাথে। আচরণের বিষয়ে বিষন্নতা নিয়ে প্রশ্ন করলে পারিবারিক ভাবে সে অশান্তিতে আছে বলে জানান। তবে তার দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী আল্পনা। তার তিন ছেলে। তাকে রেখে বছর দেড়েক আগে ভাটপাড়া আবাসনে বসবাসকারী সোনালী খাতুন নামের একজনকে বিয়ে করেন। সে স্ত্রীরও একটি ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সংসারে গেলে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝগড়া করে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে গেলে প্রথম স্ত্রী অশান্তি তৈরি করে। এই সব নিয়েই সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে তার।
বাজারের ব্যবসায়ী একলাচ হোসেন বলেন, প্রতিদিনের মতই আজও দুপুরে দোকানে আসে গোলাম হোসেন। সন্ধ্যায় তার দোকানে শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি রাস্তায় মোটরসাইকেল ভাংচুর করছে। আমরা বাঁধা দিতে গেলে উল্টো আমাদের ধাওয়া করে। পরে নিজের ব্যবহৃত আরকে ১০০ সিসি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাজারের ব্যবসায়ী মিলন হোসেন জানান, আমি দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ কালো ধোয় দেখে রাস্তায় গিয়ে দেখি তার মোটরসাইকেলে আগুন জ্বলছে। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গোলামকে আটকিয়ে রাখে। এসময় মোটরসাইকেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
গোলাম হোসেনের বড় ছেলে রাজন হোসেন জানায়, কয়েকদিন যাবত আমার দুই মাকে নিয়ে আমার বাবা খুব অশান্তিতে আছে। শুনেছি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে উন্মাদ হয়ে পড়ে থাকে। আমার মা থাকতেও দ্বিতীয় বিয়ে করাই আমার সৎ মাও তাকে খুব কষ্ট দেয়। এই নিয়ে বাবার মন খারাপ। কারো সাথে কথাও বলছেন না কয়েক দিন। যে মোটরসাইকেলটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেটি আমি ও আমার বাবা দুজনই ব্যবহার করতাম।
গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনালী খাতুন জানায়, আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করেছে তার একটিও রক্ষা করেনি। এ জন্যই মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। তবে নিজের মোটরসাইকেল পুড়িয়েছে এমন ঘটনা কেন ঘটিয়েছে তা জানিনা।
বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল বাসার জানায়, সংসারে যায় ঘটুক না কেনো এভাবে মোটর সাইকেল পোড়ানো এবং দোকান ঘর ভাংচুর করা ঠিক হয়নি। এতে বাজারের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তবে তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ্য আছে কিনা দেখতে হবে।
ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে দুই স্ত্রীর দুই সংসার নিয়ে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে মোটরসাইকেলে আগুন দেয়ার ঘটনা এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।