পরিবেশ বান্ধব গুটি ইউরিয়া প্রয়োগে কমেছে ইউরিয়ার ব্যবহার বেড়েছে ফলন
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে অনেক কিছুই। বাংলাদেশের কৃষিসহ বিভিন্নখাত রয়েছে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। তবে আশার কথা হচ্ছে- জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত এ পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রযুক্তির প্রয়োগও শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পরিবেশ বান্ধব গুটি ইউরিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন কেন্দ্র- আইএডিসি। যার মাধ্যমে সাশ্রয় হচ্ছে ইউরিয়া সার আর প্রচলিত ফলনের চেয়ে ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রযুক্তি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতির সাথে কৃষিকে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি মাঠে কৃষক মাঠ দিবসে উপরোক্ত আশার কথাগুলো বলেন কৃষি কর্মকর্তারা।
আইএফডিসি’র ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এক্টিভিটির আওতায় সাহারবাটি মাঠে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়েছে ফুলকপি। মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে ফুলকপির সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় সন্তোষ প্রকাশ করে এ প্রযুক্তি প্রয়োগের উচ্ছসিত আশার কথা বলেন কৃষকরা।
অনুষ্ঠানে বক্তরা আরও বলেন, আমাদের দেশে গুড়া ইউরিয়া সার ফসলের জমিতে উপরি প্রয়োগ করা হয়। ফলে বাতাসের সাথে কিছু অংশ মিশে গিয়ে পরিবেশ দূষিত করে। গুটি ইউরিয়া একটি ফসলে একবারই মাটির নিচে পুতে দিয়ে আবাদ সম্পন্ন করা হয়। এতে ফসলের সুবিধামত সময়ে ইউরিয়ার চাহিদা পূরণ হয়। বাতাসের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় ইউরিয়ার পরিমাণও লাগে কম। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ২৫ ভাগ ইউরিয়া সাশ্রয় হচ্ছে আর ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে ৩০ ভাগ। যা কৃষককের জন্য অবশ্যই মঙ্গলজনক। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খেয়ে বিভিন্ন জাতের ফসল আবাদ ও গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে সকল কৃষককে পরামর্শ দেন বক্তারা।
আইএফডির এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে।
মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন। সাহারবাটি এফ এম কৃষি ক্লাব সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও আইএফডিসি মেহেরপুর জেলা কর্মকর্তা আলগমীর রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা জুয়েল রেজা ও আইএফডিসি যশোর অঞ্চল ফিল্ড সুপারভাইজার মীর আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কৃষক কৃষাণীরা।
মাঠ দিবসে গুটি ইউরিয়া দিয়ে উৎপাদিত ফুল কপিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করেন অনুষ্ঠানের অতিথি ও কৃষকরা।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার সবজি চাষখ্যাত সাহারবাটি মাঠে কৃষকরা এক বিঘা ফুল কপি আবাদে গুড়ো ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেন ৫৩ কেজি। এর বিপরিতে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করা হয়েছে ৪০ কেজি। গুটি ইউরিয়া প্রয়াগকৃত জমিতে গুড়ো ইউরিয়ার জমির চেয়ে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি।