এম চোখ ডট কম, মুজিবনগর :
গাংনীর বামন্দী নিশিপুরের বুলুয়ারা খাতুন (৩১) হত্যাকাণ্ডের সন্দিগ্ধ হিসেবে আসান আলী মোল্যা ওরফে আহসানকে (৩৫), গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতরাতে শরীয়তপুর জেলার মোল্লার হাট পেদা মার্কেটের নাজমুলের হোটেলের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মেহেরপুর জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল।
গ্রেপ্তার আহসান মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুরগ্রামের হঠাৎপাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে। নিহত বুলুয়ারার সাবেক স্বামী ছিলেন আহসান।
গেল ২০ ফেব্রুয়ারি মুজিবনগরের মহাজনপুর গ্রামের মাঠের একটি গম ক্ষেত থেকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে বুলুয়ারার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার পরিচয় মেলে।
ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাত কয়েকজনকে।
এদিকে বুলুয়ারার পরিচয় পাওয়ার পর তার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া আহসান তার সাবেক স্বামী। তিন চার দিন আগে বাড়ি থেকে আহসানের উদ্দেশ্যে বের হয় বুলুয়ারা। প্রথম স্বামী নিশিপুরের রফিকুল ইসলাম মারা গেলে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্কের জেরে আহনানের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন বুলুয়ারা। বিয়েরর কিছুদিন পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। তবে গত কয়েক মাস থেকে আবারও দুজন বিয়ে করার চেষ্টা করছিল বলে জানায় পরিবার।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের আগের দিন পরিবারের লোকজনের সাথে বুলুয়ারার সর্বশেষ মোবাইলে কথা হয়। আহসানের সাথে কুষ্টিয়ায় আছে বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন বুলুয়ারা। আহসান কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলে গেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন বুলুয়ারার মেয়ে এবং তার দুই বোন।
মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, বুলুয়ারাকে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। হত্যাকাণ্ড সন্দেহে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত করানো হয়। এর পরে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছিল। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করছিল পুলিশ। পুলিশের তদন্তে আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তার আগেই আহসান তার অবস্থান বদল করতে থাকে। রাজধানী ঢাকা হয়ে বিভিন্ন জেলায় তার অবস্থান ছিল বলে প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে পারে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত শরীয়তপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আহসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং রহস্য উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন ওসি।