এম চোখ ডটকম, মেহেরপুর :
মেহেরপুরের মুজিবনগরে স্বাধীনতা সড়ক চেক পোষ্টে প্রাথমিক ভাবে যাত্রী চলাচলের জন্য অনুমোদন পাশ করেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারিতে মুজিবনগর স্থলবন্দরের জন্য স্থল কাস্টমস স্টেশন অনুমোদন দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এ বিষয়ে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগরখ্যাত মেহেরপুর জেলার মানুষের আশার প্রতিফলন হয়েছে।
মুজিবনগরে কাস্টমস স্টেশন অনুমোদন প্রজ্ঞাপন:
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (কাস্টমস) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এস. আর. ও. নং ৩৭-আইন/২০২২/৫৩/কাস্টমস জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে উল্লিখিত কাস্টমস স্টেশনসমূহের মাধ্যমে কলাম (8) এনির্দিষ্টকৃত পণ্যসমূহকে ভারত বা মায়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত নির্গমন অথবা ভারত বা মায়ানমার সীমান্ত হইতে উক্ত কাস্টমস স্টেশনসমূহের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশের উদ্দেশ্যে কলাম (৩) এ উল্লিখিত স্থলপথ বা অভ্যন্তরীণ জলপথকে রুট (route) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই গেজেট প্রকাশের পর মেহেরপুরবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এলাকার জনগণ। বিশেষ করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেনের সাফল্য বলে উল্লেখ করেছেন জেলার মানুষ।
আরও পড়ুন:
মেহেরপুরের মুজিবনগর স্বাধীনতা সড়ক মুজিবনগর- ভারতের চাপড়া কৃষ্ণনগর সড়ক পথে আমদানিযোগ্য পণ্য গুলো হলো মাছ, সুতা, গুঁড়া দুধ, চিনি ও আলু (HS Code 0701.90.19 0701.90.29) ব্যতীত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও নং ১৪/ডি/কাস/৭২, তারিখ : ২৯-০৪-৭২ এর টেবিলের পার্ট-VI এর অধীনে সুনির্দিষ্টকৃত ওজনের মালামাল এবং প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ করা যাবে।
অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত কেবল যাত্রী চলাচল করতে পারিবে। রপ্তানিযোগ্য পণ্য এখন আসা যাওয়া করতে পারবে না।
স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুরের মুজিবনগর (তৎকালীন বৈদ্যনাথতলা)আম্রকান হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ স্থান। যে সড়ক ধরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল জাতীয় চার নেতাসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিনিধিরা মুজিবনগরের এসে শপথ নিয়েছিলেন। যার নাম দেওয়া হয়েছে স্বাধীনতা সড়ক।
স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরে হলেও মুজিবনগর-কলকাতা “স্বাধীনতা সড়ক” নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এক কোটি চার লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে নির্মাণ হয়েছে এ স্বাধীনতা সড়কটি। যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমুজ্জ্বল করেছে।
কাস্টমস স্টেশন অনুমোদন নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া:
মেহেরপুর জেলা চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ গোলাম রসুল বলেছেন, স্বাধীনতার সুতিকাগার বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী ঐতিহাসিক মুজিবনগরে স্থলবন্দর ও চেকপোস্ট ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ। চেকপোস্ট হওয়ায় এলাকার উন্নয়ন ও অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মেহেরপুরবাসীকে আর দর্শনা, বেনাপোল ও রাজশাহী সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যেতে হবে না। এখানে চেকপোস্ট হওয়ায় এখন থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ মুজিবনগর চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। ভারত থেকেও আসা যাবে।
এদিকে বাংলাদেশে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি বলেন, আমরা সার্বিক বিষয়গুলো পরিদর্শন করে দেখেছি স্বাধীনতা সড়কের এ দেশের অংশের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ভারতের অংশের কাজ দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। কাজ শেষ হলেই চালু হবে দুই দেশের বন্ধুত্বের সাক্ষী এই স্বাধীনতা সড়ক।’
আর এই সড়কের কাজ শেষ হলে শিগগিরই ভারত-বাংলাদেশ সংযোগকারী স্বাধীনতা সড়ক চালু করা হবে। স্বাধীনতা সড়ক পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার (রাজশাহী অঞ্চল) সঞ্জীব কুমার ভাট্টি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন এমপি বলেছেন, মুজিবনগের স্থলবন্দর ও চেকপোস্ট হওয়া বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আন্তরিকতা। মেহেরপুর জেলাবসীর পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন। মুজিবনগর- কলকাতা চেকপোস্ট হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক যেমন মজবুত হবে তেমনি এলাকার উন্নয়ন হবে। মুজিবনগর পর্যটন কেন্দ্রও সমৃদ্ধ হবে।
তিনি আরও জানান, ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের মাত্র ৩০০ মিটার ইটের সোলিং করা। এটুকু পাকা করে সড়কটি প্রশস্ত করলেই চেকপোস্ট উন্মুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিঁনি। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুজিবনগরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন হয়। ঐতিহাসিক এ সড়কটি দিয়ে দেশের অনেক উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। কাস্টমসসহ অন্যান্য দফতর এখানে কাজ করছে।ৎ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন দেখতে ক্লিক করুন: