এম চোখ ডটকম, মুজিবনগর :মেহেরপুরের মুজিবনগর বাগোয়ান ইউনিয়নের ২ ইউপি সদস্য গ্রাম্য সালিশের নামে এক যুবকের নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। তবে ভিকটিমকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা ওই ২ ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন মিলে ভাগ করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গেল শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) মুজিবনগর উপজেলা দারিয়াপুর ইউনিয়নের গৌরিনগর গ্ৰামের আশাদুল ড্রাইভারের বাড়ির সামনে হুদা মিয়ার আম বাগানে ।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়- বন্ধুত্বের খাতিরে গেল শুক্রবার ১১ টার দিকে মেহেরপুর শহরের নবাব ও মুজিবনগর উপজেলার রতনপুর গ্ৰামের মুক্তিযোদ্ধার এক যুবতী কন্যা (২২)গৌরিনগর গ্ৰামের হুদা মিয়ার আম বাগানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এসময় স্থানীয় জনতা সন্দেহজনক ভাবে তাদের আটক করে। পরে রতনপুর গ্রামের জনৈক ডলারের মাধ্যমে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের জানালে হলে অভিভাবকগন স্থানীয় ইউপি সদস্য বাগোয়ান ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য বল্লভপুর গ্রামের বাবুল মল্লিক ও একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য বাগোয়ান গ্রামের রকিব মেম্বরকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন । সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে বসে অবৈধ বিচার সভা। আলোচনার এক পর্যায়ে সমস্যার সমাধানে ওই যুবতীর ক্ষতিপূরণ বাবদ নবাবের তিন লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়। অনাদায়ে বিয়ে দিতে বিয়ের মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত দেন ইউপি সদস্যরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সন্তুষ্ট থাকেন দুই ইউপি সদস্য। যার মধ্যে ওই নারী ইজ্জতের দাম পান মাত্র ২০ হাজার টাকা । বাকি টাকা ওই দুই ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন মিলে ভাগাভাগি করে নেন।
নবাবের অভিভাবক তার ভগ্নিপতি সজিব হোসেন জানান- জরিমানা মেনে নিয়ে ইউপি সদস্য রকিব উদ্দীনের হাতে সজীব নগদ ৮০টি এক হাজার টাকার নোট অর্থাৎ আশি হাজার টাকা (জরিমানা) দিয়ে তার শালাকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যাই।
পরে ভুক্তভোগীকে মাত্র ২০হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা ইউপি সদস্যরা নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী জানান- ওখানে এমন হবে আমি জানতাম না। আমাদের কথা বলার সময় গ্ৰামের লোকজন আমাদের সন্দেহ করে আটকিয়ে রাখে । পরে মিমাংসা হলে আমার হাতে তারা ২০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয় বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন- শুনছি ৮০ / ৯০ হাজার টাকা আমি ২০ হাজার টাকাই পেয়েছি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রকিব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সবকিছুই মিটে গেছে এবং আপন আপন বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। টাকা-পয়সার লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা। আমি এর সাথে কোন ভাবেই জড়িত না। আমার বিষয়ে যদি বলে থাকে তাহলে সেটা ভুল। কোন জরিমানা বা টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমি জানিনা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বাবুল মল্লিক বলেন-যেহেতু আমার ইউনিয়নের মেয়ে এবং তাকে হস্তান্তরের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল। তাই আমি অসুস্থ্য ও রাত জেগে খেলা দেখার জন্য চোখে ঘুম নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তবে আমার সামনে কোন টাকা-পয়সা লেনদেন হয়নি। আমি জানিনা মেয়েটি কোন টাকা পেয়েছে কি না? আমি অসুস্থ্য ও ঘুমের জন্য ঘটনাস্থলের একটি বাড়িতে শুয়ে ছিলাম। তাই আমার মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন হয়নী বিষয়টি মিথ্যা।
এব্যাপারে মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান- বিষয়টি আমার অজানা। আর ইউনিয়ন পরিষদের বাইরে এধরণের সালিস বিচার অবৈধ। যদি কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে প্রয়জনীয় আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।