মেহেরপুরের ডাঃ আব্দুস সালাম এবার জেল হাজতে
এম চোখ ডট কম, মেহেরপুর:
মেহেরপুর দারুস সালাম ক্লিনিকে অপারেশনে চিকিৎসকের অবহেলার প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ডাঃ আব্দুস সালামকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (১০ জুলাই) মেহেরপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, দারুস সালাম ক্লিনিকে অপারেশনে চিকিৎসকের অবহেলার প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় মেহেরপুর আমলি আদালতের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম শরিয়ত উল্লাহ গেল ৩০ জানুয়ারী স্বপ্রণোগিত হয়ে একটি মিস কেস করেন। মামলাটি মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল ও সিভিল সার্জন আদালতের নির্দেশে অনুসন্ধান পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন।
জানা গেছে, দারুস সালাম ক্লিনিকের মালিক ডাঃ আব্দুস সালাম নিজেই অপারেশন করেছিলেন। অপারেশনে তিনি বিধি ভঙ্গ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক উপস্থিতি নিশ্চিত না করে নিজেই অপারেশনের সকল কাজ সম্পন্ন করেন। অবহেলায় অপারেশন টেবিলেই রোগীর মৃত্যু হয়। এ অপরাধে ডাঃ আব্দুস সালাম ওই মামলার প্রধান আসামি। সোমবার মামলার ধার্য দিনে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ডাঃ আব্দুস সালাম। বিজ্ঞ আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিন। আদালতের নির্দেশে তাকে মেহেরপুর জেলা কারাগারের জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন : আরও আট জেলায় নতুন ডিসি গাংনীতে সন্তানদের সম্পদ ভাগাভাগির অবহেলার বলির শিকার বৃদ্ধা সাহেরা অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় সালাম ক্লিনিকের নামে আদালতের মামলা
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ঢোলমারি গ্রামের মিলন হোসেনের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করা হয় মেহেরপুর শহরের কলেজ মোড়ে অবস্থিত দারুস সালাম ক্লিনিকে। ক্লিনিক মালিক ডাক্তার আব্দুস সালাম নিজেই অপারেশন করেন। অপারেশন টেবিলেই সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। প্রকৃতপক্ষে অপারেশনের সময় নিয়মানুযায়ী অন্যান্য চিকিৎসকদের উপস্থিতির বিষয়টি ডাক্তার আব্দুস সালাম মিডিয়াতে বললেও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তিনি একাই সব চিকিৎসকের দায়িত্ব নিয়ে অপারেশন করেছিলেন। রোগী মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার আব্দুস সালামকে দায়ী করেন স্বজনরা। এই ঘটনা বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশ হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রায়ই মেহেরপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসায় অবহেলার এবং বিধি বহির্ভূতভাবে ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এর সাথে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত। একজন অসুস্থ মানুষ চিকিৎসক ও ক্লিনিকের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করে নিজের শরীরের উপর হস্তক্ষেপের অধিকার প্রদান করে। হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসকের অবহেলা একজন রোগীর সাথে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল। যা দন্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একইসাথে রোগীর জীবন বিপন্ন হলে আরও অন্যান্য ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও The Medical Practice and Private Clinic and Laboratories (Regulation) Ordinance ১৯৮২, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ অনুসারে মানদণ্ড অনুসরণ না করলে সেটিও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।