মেহেরপুরে বাজার পরিস্থিতি ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক মতবিনিময় সভায় ডিসির বার্তা
এম চোখ ডট কম, মেহেরপু:
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, বর্তমান সরকারের এবারের নির্বাচনী এশতেহারের প্রথমে রয়েছে- ‘‘দ্রব্য মূল্য সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’’ এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্রব্য মূল্যের বিষয়টি বলেছেন। কাজেই ব্যবসায়ী, ক্রেতা-ভোক্তা, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে।
সোমবার বিকেলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে বাজার পরিস্থিতি ও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি উপরোক্ত আহবান জানান।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও কনজুমারসক এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মেহেরপুর জেলা শাখা রমজান উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক বলেন, যেখানে মুনাফা জড়িত সেখানে নীতি নৈতিকতা সব সময় কাজ করে না। কেননা কথায় আছে- চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। একমাত্র সামাজিক পরিবর্তন, মানুষকে সচেতন করা, সব শ্রেণি পেশার মানুষের উল্লেখযোগ্য ভুমিকা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। এসবের মেলবন্ধনে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ক্রেতা-ভোক্তাদের অনেক দোষ ত্রæটি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা কোন প্রকার দরাদাম ছাড়াই ইচ্ছেমত পণ্য কেনেন। এক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা হাতিয়ে নেওয়া সুযোগ পায়। ক্রেতা হিসেবে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে- দরাদাম করে নায্যমূল্য দিয়ে পণ্য কেনা। এতে দুর্বল ক্রেতারাও সুযোগ পাবেন। মনে রাখতে হবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া শুধুমাত্র মোবাইল কোর্ট করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় বাজার পর্যবেক্ষণ ও ক্রেতা-ভোক্তাদের সচেতনতার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অন্যদিকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কেনা বন্ধ করতে হবে। একসাথে অনেক দিনের বাজার কিনে পণ্য বাজারে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি থেকেও বিরত থাকতে হবে।
মেহেরপুর জেলায় উৎপাদিত পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে কতটা পার্থক্য হচ্ছে তা একজন ক্রেতাকে জানতে হবে। যাতে উৎপাদনকারীকে ঠকিয়ে মধ্যস্বত্তভোগীরা বেশি মুনাফা নিতে পারে। অন্যদিকে যে পণ্যগুলো বাইরে থেকে দর ঠিক হয়ে আসে সেগুলোর বিষয়ে সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে বিকল্প পণ্য ক্রয় করতে হবে।
অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতি হুশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেন, আমরা সকলেই ক্রেতা কিংবা ভোক্তা। একজন ব্যবসায়ী কয়েকটি পণ্য বিক্রি করে আবার কয়েকটি পণ্য ক্রয় করে পরিবারের জন্য। কাজেই সব সময় ব্যবসায়ী হিসেবে চিন্তা না করে ক্রেতা বা ভোক্তা হিসেবেও নিজেকে চিন্তা করতে হবে। আমরা সচেতনতা সৃষ্টি করছি। পাশপাশি আইনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানভির রুম্মান আহম্মেদ, রাখেন ক্যাব মেহেরপুর জেলা শাখা সভাপতি রফিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল হক মানিক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহম্মেদ, জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক, স্যানেটারি ইন্সেপেক্টর তরিকুল ইসলাম, মেহেরপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, চ্যানেল ২৪ স্টাফ রিপোর্টার রাশেদুজ্জামান, ক্যাব গাংনী শাখা সভাপতি তৌহিদ-উদ-দৌলা রেজা, মুজিবনগর উপজেলা শাখা সভাপতি মুন্সি উমর ফারুক প্রিন্স, সাধারণ সম্পাদক শেখ শফি, ওয়াপদা মোড় ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি রাহিনুজ্জামান পলেন, তহবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি আশিকুর রবিন, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম শাহীন, ধানখোলা বাজার কমিটি সভাপতি তানজিদ আহম্মেদ অনি ও ক্যাব সদস্য দিলারা জাহানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।