মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে স্থানীয় আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা
এম চোখ ডট কম, গাংনী:
মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে এবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। নৌকার মাঝি মনপুত না হওয়া এবং ভোটের পরিবেশ উৎসব মুখর করতেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুলকে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে এ প্রার্থী চুড়ান্ত করা হয়। মোখলেছুর রহমান মুকুল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর-২ আসনের বর্তমান এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন। বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোখলেছুর রহমান মুকুল, উপজেলা আওয়ামী লগের সাংগঠনিক সম্পাক নজরুল ইসলাম, সাবেক পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম ও মনিরুজ্জামান মাস্টার, পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রাহিবুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা সাহিদুজ্জামান সিপু, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টুসহ ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরপুর-২ আসনটি গাংনী উপজেলা নিয়ে গঠিত। আসনটিতে আওয়ামী লীগের নতুন মুখ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ নাজমুল হক সাগর। ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে এ আসনটিতে সাংগঠনিক ইউনিট ১০টি। উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সবগুলো ইউনিট প্রধান ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বেশিরভাগ নেতৃবৃন্দ বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন। নেতাকর্মী ও জনগণের সাথে পরিচিতি নেই এবং গাংনীর রাজনীতির বাইরের একজন মানুষকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় তাকে দিয়ে নৌকার বিজয় সম্ভব নয়। এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানের বক্তরা। অন্যদিকে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো এবং উৎসব মুখর পরিবেশ নিশ্চিত করা শুধু নৌকার মাঝিকে দিয়ে সম্ভব নয় বলে মতামত দেন উপস্থিত বেশিরভাগ নেতাকর্মী। তাই সর্বসম্মতভাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুলকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করার দাবি করেন নেতাকর্মীরা। সভার শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত করা হয়। এ দাবি মেনে নেন মুকুল। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সহকারি রির্টার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিবেন বলে ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, মেহেরপুর-২ আসনটি বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী কিংবা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করে থাকে। ১৯৯৬ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন বর্তমান এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন। ১৯৯১, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটি পায় বিএনপি। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন এবারও মনোনয়ন চেয়ে পাননি। ইতিমধ্যে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নত্র দাখিল করেছেন। তাহলে এ আসনটির ভোটের মোড় দিক দিকে গড়াবে তা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।