রাস্তায় বেড়া দিয়ে গাছ রোপন গাংনীর সহড়াতলায় ৩০ পরিবার জিম্মি
এম চোখ ডট কম, গাংনী: রাস্তায় বেড়া দিয়ে গাছ রোপন করায় অন্তত ত্রিশটি পরিবার জিম্মি হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও মাঠের ফসল আনা নেওয়ার করতে পারছেন না ভুক্তভোগী পরিবার। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গ্রামের সিরাজুল ইসলাম গং সম্প্রতি রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া সিরাজুল ইসলামের দাবি, তিনি দলিল মূলে ওই সম্পত্তির মালিক। অন্যদিকে নজিবুর রহমান গং বলছেন জমিটি তাদের। আদালত তাদের পক্ষে রায় দিলেও পেশি শক্তির বলে সিরাজুল ইসলাম ও তার লোকজন রাস্তাটি বন্ধ করে গাছ রোপণ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার শহরাতলা গ্রামে। গ্রামের নজিবুর রহমান গং জানান, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৪৬ শতক জমি বন্দোবস্ত নেন সুরত আলী। ১৯৬২ সালে জলদি আয়নাল হকের নামে ওই জমি রেকর্ডভুক্ত হয়। ১৯৮৪ সালে রেকর্ড সংশোধনী মামলা করা হয় তৎকালীন গাংনী আদালতে কিন্তু বিজ্ঞ আদালত আয়নাল হকের পক্ষে রায় দেন। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে মেহেরপুর জজ করতে আপিল করেন সুরত আলীগং। ১৯৯৩ সালে বিজ্ঞ আদালত সুরত আলি পক্ষে রায় দেন। উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিক হন নজিবুর রহমান ও তার লোকজন। এদিকে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আয়নাল হক গং। বর্তমানে আদালতে মামলাটি চলমান। তবুও নানাভাবে প্রতিপক্ষ আয়নাল হক গংয়ের লোকজন সুরত আলী পক্ষের লোকজনকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। অন্যদিকে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে নজিবুর রহমানের সাথে দ্বন্দ্বের জের ধরে তারই ভাই সিরাজুল ইসলাম আয়নাল হক গংয়ের কাছ থেকে ওই বিরোধপূর্ণ জমি ক্রয় করেন। জমি কেনার পর থেকে সিরাজুল ইসলাম গং নীরব থাকলেও হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে নজিবুর রহমান গ্রুপের লোকজনের চলাচলের পথে বেড়া দিয়ে মেহগনি গাছ রোপন করেন। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ওই পথে চলাচল কারী ও অন্তত ত্রিশটি পরিবার। স্থানীয়রা জানান, জমি নিয়ে মামলা চলমান অথচ ৩০টি পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়াটা উচিত নয়। এতে করে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। মাঠের তারা ঘরে তুলতে পারছেন না। শতবর্ষের পুরাতন এই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামের লোকজনও ওই পথ দিয়ে মাঠে চলাচল করতে পারছেন না। এদিকে সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ক্রয় সূত্রে জমির মালিক। জমির আদালতের রায় দিলেও আমরা দখল নেই নি। সম্প্রতি নজিবুর গ্রুপের লোকজন জমির প্রকৃত মালিক যার কাছ থেকে জমি ক্রয় করা হয়েছে তাদের নামে মামলা না করে তার নামে মামলা করেছে। এজন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং গাছ রোপন করা হয়েছে। নজিবুর গ্রুপের লোকজন অনুরোধ করলে রাস্তাটি খুলে দেয়া হবে বলেও জানালেন তিনি। স্থানীয় লোকজন জানান, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে এখন পারিবারিক দ্বন্দ্বে রূপ নিয়েছে এর সমাধান একমাত্র তারাই করতে পারে। স্থানীয়রা আরো জানান, এ জমি নিয়ে গ্রাম ও শহর সবখানেই আলোচনা ও উভয়পক্ষকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু উভয়পক্ষ শালিস মানতে নারাজ। উভয় পক্ষই জমির মালিক নিজে বলে দাবি করায় এবং ছাড় দেওয়ার মন মানসিকতা না থাকায় সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে গ্রামের লোকজন ও অন্যান্যরা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।