এম.এইচ মানিক:
বর্তমান সময়ে অনলাইনে আয়ের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং । বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় এ লেখার অনেক চাহিদা রয়েছে। সোস্যাল মিডিয়া ও ওয়েবসাইটের জন্য প্রতিদিনেই লেখা প্রয়োজন। নিজের ব্লগ কিংবা ক্লায়েন্টের ব্লগের জন্য কন্টেন্ট লিখে আয় করার সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। লেখনীর মাধ্যমে আপনিও আয় করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে যে, সৃজনশীল লেখা আর মেধার বিকাশ ছাড়া এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা দুস্কর। তাই যাত্রা শুরুর আগে আপনাকে দক্ষ হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে। বাংলা ব্লগ রাইটিং বিষয়ে আদ্যাপান্ত জানতে হবে।
লেখার জগতে আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে নতুনদের শেখানের উদ্দেশ্য নিয়েই একটি পুর্নাঙ্গ কোর্স নিয়ে এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। ধারাবাহিকভাবে কোর্স সম্পন্ন করলে অবশ্যই আপনি একজন দক্ষ লেখক হবেন। কোর্সের প্রথম দিন আজ আমরা দেখবো কন্টেন্ট রাইটিং। এই লেখার শেষে দেওয়া ভিডিও থেকেও আপনি শিখতে পারেন।
কন্টেন্ট রাইটিং কি
কন্টেন্ট অর্থ হচ্ছে বিষয়বস্তু। যখন আপনি নির্দিষ্ট কোন বিষয়বস্তু নিয়ে লিখবেন তখন সেটি কন্টেন্ট রাইটিং। ধরুন আপনাকে মোবাইল নিয়ে লিখতে বলা হলো। আপনি যখন নির্দিষ্ট করে কোন মোবাইল নিয়ে লিখবেন তখন সেটি কন্টেন্ট রাইটিং।
কন্টেন্ট কতো প্রকার
কন্টেন্ট রাইটিং তিন প্রকার।
- টেক্স কন্টেন্ট
- ভিডিও কন্টেন্ট
- পিকচার কন্টেন্ট
টেক্স কন্টেন্ট
আমি এখানে কন্টেন্ট রাইটিং শিরোনামে লিখতেছি। এই লেখা হচ্ছে টেক্স কন্টেন্ট। লেখার মাধ্যমে বিষয়বস্তু তুলে ধরা।
ভিডিও কন্টেন্ট
ভিডিও কন্টেন্ট হলো ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে কোন বিষয়বস্তু তুলে ধরা। মিনা কার্টূন, টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনসহ অনেক বিষয়ের ভিডিও আছে যা দেখে আমরা বিষয়বস্তু বুঝতে পারি।
পিকচার কন্টেন্ট
আমরা প্রায় সকলেই ফেসবুক দেখি। ফেসবুকে অনেক সময় আমরা একটি ছবি দেখি। যা দেখে আমরা বুঝতে পারি যে ছবিতে কি বোঝানো হয়েছে। এটাই পিকচার কন্টেন্ট।
কন্টেন্ট রাইটিং কেন করবেন ?
শেখা বা কাজ করার জন্য তো অনেক বিষয় আছে। তাহলে কেন আপনি কন্টেন্ট রাইটিং শিখবেন ?
আমরা সবাই কিন্তু লেখক। বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের সকলেইর লিখতে হয়। আজ যা লিখছি কাল লিখতে গিয়ে আর একটু ভালো হচ্ছে। এভাবে লিখতে লিখতে অনেক ভালো হয়। অথাৎ লেখার মাধ্যমে মানুষের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ। অপরদিকে আয় করার জন্যও কন্টেন্ট রাইটিং করা যায়। যেমন ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন সেক্টরে কন্টেন্ট রাইটিং লিখে আয় করা যায়। অপরদিকে বিভিন্ন কোম্পানীতে কন্টেন্ট রাইটার পদে চাকুরীও পাওয়া যায়। কোন কোম্পানীর প্রডাক্টের বিষয় বস্তু যা আমরা দেখি তা কোন একজন কন্টেন্ট রাইটারের লেখা। এ লেখার কাজে কোম্পানী কন্টেন্ট রাইটার নিয়োগ দেয়। লেখার মাধ্যমে দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়।
কন্টেন্ট রাইটিং দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। কথায় আছে “Practice Makes A Man Perfect.” লেখার দক্ষতা ধরে রাখতে হলেও অনুশীলনের বিকল্প নেই। কন্টেন্ট রাইটিং শিখে যদি কাজে না লাগানো যায় তাহলেও দক্ষতা থাকে না। যা পারেন লিখতে থাকেন। ভুল হতে হতে এক সময় সঠিক হয়ে যাবে। আপনি যদি না লেখেন তাহলে ভালো মন্দ বুঝবেন কিভাবে ?
কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারবেন কারা ?
Writing passion- লেখাকে পেশা নয়, আগে নেশায় পরিণত করতে হবে। টাইপিং করতে ভালো লাগা থাকতে হবে। কন্টেন্ট রাইটিং শেখার আগ্রহ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই শেখা সম্ভব। আমি পারবোই এবং আমি শিখবোই এমন দৃঢ় মানসিকতা থাকতে হবে।
Writing Creativity- সৃজনশী চিন্তাভাবনা থাকতে হবে। আমি পারি না, আমার ভালো লাগে না এ ধরনের মনোভাব পরিহার করতে হবে।
Reading Skill- ভালো লেখক হতে চাইলে প্রথমেই ভালো পাঠক হতে হবে। মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে আর তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। ধরুন আপনাকে যুক্তরাজ্যের হোটেল নিয়ে লিখতে বলা হলো। তাহলে আপনি কি করবেন ? অবশ্যই আপনি নেটে সার্চ দিয়ে পড়াশোনা করেই লিখবেন।
Thinking Power– কন্টেন্ট রাইটিং এ কপি-পেস্ট নামে কোন বিষয় থাকবেই না। এটা ভালো কন্টেন্ট এর প্রথম শর্ত। কোন বিষয়ে ভালোভাবে পড়ে চিন্তাভাবনা করে নিজের ভাষায় লিখতে হবে।
Fast Typing- কন্টেন্ট রাইটিং করতে হলে অবশ্যই টাইটিং স্কিল থাকতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে বিভিন্ন মাধ্যমে টাইপিং করতে হয়। তাই লেখার দক্ষতা না থাকলে কাজগুলো ভালোভাবে করা সম্ভব না। বাংলা টাইপিং অভ্রতে করতে হবে।
Grammar- ব্যাকরণগত বিষয়ে কোনভাবেই অবহেলা করা যাবে না। ধরুন ফেসবুকে কারও একটি পোস্টে আপনি বানান বা ব্যাকরণগত ভুল লেখা দেখলেন। আপনার প্রতিক্রিয়া তখন কেমন হবে ? নিশ্চয় ভালো লাগবে না। লেখায় ভুল থাকলে মূল বিষয়বস্তুই পাঠক আর দেখতে চাইবে না। তখন বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে ভুল নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকবেন পাঠকরা।
মনে রাখতে হবে, লেখার মধ্যে কোন শব্দ ভুল থাকলে লেখার অর্থ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। রাইটার হিসেবে লিখতে গেলে ভুল করার কোন সুযোগ নেই। আপনার লেখাটি পাঠকরা পড়বেন তাই ব্যাকরণগত বিষয়ে নজর দিতে হবে।
কন্টেন্ট রাইটিং শুরু করবেন যেভাবে
লেখা শুরু করতে হবে
যারা ভাবছেন কন্টেন্ট রাইটিং করবেন তারা আজই লেখা শুরু করুন। এ প্রফেশনের প্রথম কাজই হচ্ছে লেখা শুরু করা।
শুরুতে আয়ের চিন্তা নয়
অনেকে আশা করেন ফ্রিল্যান্সিং করবো, টাকা ইনকাম করবো, আমার প্রফেশন হবে ফিল্যান্সিং, আমি লেখালিখি করবো। তাহলে আপনার উদ্দেশ্য ফিল্যান্সিং করে আয় করা। কন্টেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে শুরুতে আয়ের কথা মাথা থেকে ফেলে দিন। লেখার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করুন। লিখতে লিখতে দক্ষতা বাড়বে। দক্ষতা বাড়লেই টাকা আসতে থাকবে। যত বেশি চর্চা করবেন দক্ষতা ততই বৃদ্ধি পাবে।
অনলাইন প্লাটফর্মে প্রচুর লেখালেখি
অনেক জায়গায় ফ্রি তে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ আছে। ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে মূলত কাজগুলো হয়। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে কাজগুলো বেশি ছিল। আপনি এমন একটি ইভেন্টে কাজ শুরু করলেন। এখানে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও মেকিং, আইটি, এইচআরসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ হয়। আপনি যুক্ত হলেন কন্টেন্ট রাইটিং এ। এখানে কাজ করার সময় আপনার লেখাগুলো একজন এডিটর দেখবেন। তিনি আপনার লেখা এডিট করার পরই প্রকাশ হবে। তখন বুঝতে পারবেন কোনগুলো ভুল আর কোনগুলো ঠিক। এই এডিট সুবিধার জন্যই আপনার লেখালেখিতে আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়বে।
অডিয়েন্স পজিটিভিটি
আপনার লেখা কোন মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরে অডিয়েন্স বাজে মন্তব্য করলো। গালি দিয়ে চলে যেতে পারে। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। বিষয়টি পজিটিভ হিসেবে নিতে হবে। এ লেখার মধ্য থেকে ভুলগুলো চিহ্নিত করুন। ‘‘পাছে লোকে কিছু বলে’’ এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে। কি কি বললো আর মন্তব্য করলো তা মাথায় নেওয়ার দরকার নেই। বাজে মন্তব্য পাওয়া আপনার লেখাগুলো বারবার পড়ে তা সংশোধন করতে হবে। তাহলে ভালো লখা বের হবে। লেখালেখির জগতে একটা কথা আছে- ‘‘পাঠকরাই হচ্ছে বড় এডিটর’’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা- “নিন্দুকের বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো, যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আঁলো।”
আপনার ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়া পাঠকরাই আপনার শুভাকাঙ্খি এটা মনে করতে হবে। তাদের সাথে তর্কে জড়ানো বোকামি। পাঠক যা বলে গেল তা আপনাকে করতে হবে এমন না। পাঠকের মন্তব্যের মধ্য দিয়ে নিজেকে বিচার করুন। লেখার ফাঁকফোকরগুলো খুঁজে বের করুন। এই সামলোচক পাঠকদের জন্যই লেখা সংশোধন হয়।
অপরদিকে বেশি বেশি লিখতে হবে। ঘর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন কাজে গেলেন। ফিরে এসে তা নিয়ে ফেসবুকে একটা ছোট পোস্ট দেন। আপনি ওখানে যাওয়া আসার মধ্য দিয়ে যা দেখলেন আর চিন্তা করলেন তা থেকে লেখা বের হবে। আপনার এই চিন্তা শক্তি লেখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যর্থতা থেকে সফলতা
কন্টেন্ট রাইটিং কোর্স কমপ্লিট করেই আমি টাকা আয় করতে পারবো এ ধারণা সঠিক নয়। কোর্স কমপ্লিট করলেই টাকা আসবে এমন ভাবনা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। যতদিন এটা না সরবে ততোদিন দক্ষতা বাড়বে না। ধরুন কোন জায়গায় আপনি কন্টেন্ট রাইটিং হিসেব জব এপ্লাই করলেন। সেখানে ১৫ জন নেওয়া হবে। তার মধ্যে আপটি সিলেক্ট হলেন না। এতে আপসেট হবেন না। আমি কেন সিলেক্ট হলাম না, আমার দুর্বল জায়গাগুলো কি কি তা চিহ্নিত করে আবারও এপ্লাই করতে হবে। এটি চিহ্নিত করতে না পারলে সফল হওয়া যায় না।
কন্টেন্ট রাইটিং শেখার উপায়
কন্টেন্ট রাইটিং শেখার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স, নানা রকম কন্টেট পড়া এবং অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
From course:
কোর্স করার সময় একজন টিচার বা মেন্টর এক ঘন্টার লেকচার দিলেন। এতে কি আপনি শিখে গেলেন ? কোর্স থেকে শুধু গাইডলাইন পাবেন। আপনাকে কোনটি করতে হবে, কোনটি করতে হবে না, কিভাবে গুছাবেন ইত্যাদি। এগুলো দিয়েই তা দিয়েই অনুশীলন শুরু করুন। গাইডলাইনগুলো আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে যদি আপনি বেশি বেশি অনুশীলন করতে পারেন।
Read other content:
লেখার জন্য প্রচুর পড়তে হবে। আপনাকে একটি বিষয়ে লিখতে বলো হলো। আপনাকে সে বিষয়ে সবকিছু জানা থাকবে এমন না। এখন গুগলে অনেক কিছু পাওয়া যায়। যে বিষয়ে আপনি জানতে চান তা গুগলে সার্চ দিয়ে পড়তে থাকুন। পড়ার মধ্য দিয়ে আপনার তথ্য সম্ভার হবে। তাহলে লেখার মান বৃদ্ধি পাবে। লেখার মধ্যে যদি বিষয়বস্তুর উপযুক্ত তথ্য না থাকে তাহলে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। লেখার মান বৃদ্ধিও হয় না। তাই ভালো লেখা দেওয়ার জন্য সেই বিষয়ে পড়া আর ঘাটাঘাটি করতে হবে। লেখার দক্ষতা বাড়াতে হলে পড়ার দক্ষতা অবশ্যই বাড়াতে হবে।
Practice for improving your writing skill:
যে কোন বিষয়ের উপরে লিখতে থাকুন। ফেসবুকে ছোট ছোট পোস্ট দিতে থাকুন। আপনার যা পছন্দ তা-ই লিখুন। মূল কথা প্রতিদিন আপনাকে লিখতে হবেই। লিখতে লিখতে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। যত লিখবেন ততো দক্ষ হবেন।
কন্টেন্ট রাইটিং এর কিছু কৌশল
Target reader audience:
একটা ওয়েবসাইটের জন্য আপনাকে স্বাস্থ্য বিষয়ক কন্টেন্ট লিখতে হবে। সাইটটিতে বয়স্ক মানুষগুলো প্রত্যেকদিন পড়তে আসেন। আপনি এমন একটি কন্টেন লিখলেন যা ওই বয়স্ক মানুষগুলোর কোন কাজে লাগলো না। আপনাকে জানতে হবে অডিয়েন্স কি চাইছে ? আর আমি কি লিখছি ? লেখার বিষয়বস্তুর সাথে এর লক্ষ্যযুক্ত মানুষের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
Easy readable:
লেখা হবে সহজ সরল ভাষায়। আপনি এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করলেন যার অর্থ বেঝার জন্য পাঠকদের ডিকশনারী ঘাটতে হলো। তাহলে পাঠক তো আপনার লেখা পড়বে না। যে সাইটে সহজ লেখা পাবে সেখানে তারা চলে যাবে।
Customize:
ছোট করে লিখে বড় করবেন ? না কি বড় করে লিখে ছোট করবেন? একটা বিষয় আপনি পড়লেন সেটি নিজের ভাষায় লিখবেন। এগুলো হচ্ছে কাস্টমাইজ।
Focus on main point:
ধরুন আপনার লেখার বিষয়বস্তু বাংলাদেশের দারিদ্রতার হার হ্রাস। এখন লিখতে গিয়ে আপনি চলে গেলেন অন্য প্রসঙ্গে। দারিদ্রতার হার হ্রাস বিষয়ে অনেক কিছু লেখেন সমস্যা নেই। তবে মনে রাখতে হবে মেইন পয়েন্ট বা ফোকাস পয়েন্ট থেকে সরে যাওয়া যাবে না। আপনি যাই লেখেন না কেন দারদ্রতার হার হ্রাসের বিষয়টি ফোকাস করতে হবে।
বাংলা কন্টেন রাইটিং জব
সম্মানজনক পেশা:
অন্য কাজ সবাই পারে কিন্তু সবাই লিখতে পারে না। লেখার জন্য ইচ্ছা ও চিন্তা শক্তি সবার এক রকম নয়। এ কারণে কন্টেন্ট রাইটিং একটি সম্মানজনক পেশা।
Demandable:
ফেসবুক, গুগল সার্চ ও অন্যান্য মাধ্যমে সার্চ দিলেই বোঝা যায় কন্টেন্ট রাইটিং এ অনেক জব আছে। লেখার দক্ষতা থাকলে অনলাইনে পার্টটাইম ও ফুলটাইম জবের অভাব নেই। বিশ্বজুড়ে অনলাইন প্লাটফর্মের ব্যাপকতা তাই কন্টেন্ট রাইটিং এ জব বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘরে বসেই আপনি এ জব করতে পারেন। একটি কন্টেন্ট লিখে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করা যায়। আবার বিশ্বে অনেক কন্টেন্ট রাইটার আছেন যার একটি কন্টেন্ট লিখে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন।
ধরুন ১০০০ ওয়ার্ডের একটি কন্টেন্ট লিখে একজন পাচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা আর আপনি পাচ্ছেন সামান্য টাকা। লেখার দক্ষতা আর মানের উপর নির্ভর করে সম্মানী নির্ধারণ হয়ে থাকে।
বিভিন্ন পোর্টালে নিজের লেখা পাবলিশ করে রাখা:
আপনি যে কন্টেন্ট লিখতেছে তা বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ফ্রি ব্লগ সাইটে পাবলিশ করে রাখেন। ক্লায়েন্ট যখন আপনার সিভি চাইবে তখন এগুলোর লিংক এটাচ করে দিতে পারবেন। সহজেই ক্লায়েন্টদের দেখাতে পারবেন যে আমার লেখাগেুলো এরকম।
একটি ব্লগ পোস্ট পড়ে আসতে পারেন
নিজের ব্লগ সাইট তৈরী করা
ব্লাগ ওয়েবসাইট অথবা ফ্রি ব্লগ সাইট কন্টেন্ট রাইটারে জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এখানে লেখা পাবলিশ করে রাখা যায়। যার মাধ্যমে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা সম্ভব। অপরদিকে একটি ওয়েবসাইট থেকে এফিলিয়েট মার্কেটং করার জন্য কন্টেন্ট রাইটিং প্রয়োজন।
বিভিন্ন প্রকার কন্টেন্ট
কোন কোন ক্ষেত্রে কন্টেন রাইটিং হয় তার একটি ধারণা। নিচের এগুলো ছাড়াও আরও অনেক বিষয়ে কন্টেন্ট রাইটিং হয়ে থাকে।
|
|
লেখার জন্য কিছু ব্লগ দেখতে পারেন
ব্লগ গুলোতে অন্যান্য রাইটাররা কেমন লিখতেছেন, কি লিখতেছেন, কিভাবে লিখতেছেন, লেখার মান কেমন, এসব বিষয় দেখার জন্য এই ব্লগগুলো ফলো করতে পারেন। পড়তে পড়তে আমার লেখার দক্ষতা বাড়বে।
https://www.writersdigest.com/
https://www.dailywritingtips.com/
গ্রামার চেক করুন
রাইটার হিসেবে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা আছে গ্রামাটিক্যাল মিসটেক না হয়। লেখার পরে পাঠক হিসেবে অবশ্যই আপনার লেখাটি পড়তে হবে ২/৩ বার। বানান ভুল আছে কি না তাও দেখছেন বার বার। তবে এতে কষ্ট করতে হবে না। কিছু টুলস আছে যা দিয়ে আপনি এসব চেক করতে পারবেন। নিচের এই টুলস গুলো দিয়ে আপনি চেক করতে পারবেন। কতোগুলো শব্দ লিখেছেন তাও দেখতে পারবেন।
https://www.spellcheckplus.net/
কপি কন্টেন্ট চেক করার টুলস
কন্টেন্ট লেখার সময় আপনি শতভাগ চেষ্টা করেছেন যেন কপি না হয়। লেখার মধ্যে আপনি কপি করেননি। আপনি নিশ্চিত যে আপনি কপি করেননি। তার পরেও দেখবেন যে কিছু বাক্য হুবহু মিলে গেছে অন্য কারও লেখার সাথে। তখন আপনার লেখা কপি হিসেবে গণ্য হবে এবং ব্যান হতে পারে। কাকতালীয়ভাবে এই মিলে যাওয়া চেক করবেন কিভাবে ? এর জন্য পেইড এবং নন পেইড টুলস রয়েছে।
ফ্রি টুলস:
https://plagiarismdetector.net/
পেইড টুলস:
- Grammarly
- Copyscape
- Quoeyext
অনলাইনে লেখালেখির কাজ পাওয়ার মার্কেটপ্লেস
অনলাইনে লেখালেখির কাজের জন্য অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে। নিম্নে কিছু মার্কেট প্লেসের নাম দেওয়া হলো।
- Hub Pages
- Squidoo
- Fiverr
- Article Seller
- Yahoo Contributor
- Trionds
- Bloggging.com
- Writer Access
- Text Broker
- I Writer
পরিশেষে আরও একবার বলতে হয় ভালো লেখক হতে হলে ভালো পাঠক হওয়ার কোন বিকল্প নেই। অপরদিকে বেশি বেশি অনুশীলন চালু রাখতে হবে। একজন লেখকের সৃজনশীল চিন্তার বহি:প্রকাশ ঘটে তার লেখনীতে। সহজ সরল ভাষায় শব্দের মালা গাঁথুনী হচ্ছে রাইটিং দক্ষতা। লেখার প্রাণ হচ্ছে পাঠক। পাঠকদের লেখার মধ্যে ধরে রাখা এবং লেখা পড়ার বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টির দিকে বেশি নজর দিতে হবে। লিখতে লিখতেই একজন রাইটার ভালো রাইটার হয়।
–এম.এইচ মানিক, প্রফেশনাল কন্টেন্ট রাইটার
এই ক্লাসের ভিডিও দেখতে পারেন